ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকুনগুনিয়া থেকে রেহাই দেবে মশারি

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৭
চিকুনগুনিয়া থেকে রেহাই দেবে মশারি চিকুনগুনিয়া থেকে রেহাই দিবে মশারি- ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ডেঙ্গুর মতোই এডিস মশার আক্রমনেই ঘটে ভাইরাসজনিত প্রদাহ চিকুনগুনিয়া। এই জ্বরের হাত থেকে রক্ষা পেতে মশার বংশবিস্তার রোধ করতে হবে। আর ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি সবসময় পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই বিশেষজ্ঞরা মশারি টানানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

শনিবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) সানিয়া তাহমিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অনেক সময় গরমের করণে ভোর বেলায় মশারি খুলে ফেলি।

অথচ সন্ধ্যা ও ভোরেই এডিস মশা কামড় দেয়। এই সময়টায় সতর্ক থাকতে হবে। মশা সাধারণত পায়ের গোড়ালিতে কামড় দেয় বেশি। তাই পায়ে মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে বা ঢেকে রাখতে হবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্ররণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)  পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিরজাদী সেব্রিনা বলেন, চিকনগুনিয়ার কোনো ভ্যাকসিন নেই। এডিস মশার বিস্তার যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই জ্বরে আতংকের কিছু নেই। একবার চিকুনগুনিয়া হয়ে গেলে ভবিষ্যতে আর হবে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত রোগিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো দরকার নেই। জ্বর নিয়ন্ত্রণের জন্য প্যারাসিটামল ও গা মুছিয়ে (স্পঞ্জিং) দিতে হবে। প্রচুর পানি, শরবত, খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি পান করালে রোগি স্বস্তি বোধ করবে।

তিনি বলেন, এ রোগে মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। দলে দলে হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ বিষয়ে গাইড লাইন পাঠানো হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও পাওয়া যাবে।

ডা. আবুল কালাম আজাদ পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাসা বাড়িতে যেন কোথাও পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে দেখা গেলো নিজের বাসায় সাবধানে থাকলেন, কিন্তু পাশের বাসায় বা রাস্তায় পানি জমে আছে। তাই দিনের বেলাতেও শোয়ার সময় মশারি টানিয়ে রাখার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিশুদের মধ্যে চিকুনগুনিয়ার লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। তবে গর্ভবতী মায়েদের এ ব্যাপারে ঝুঁকি নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, শরীরের গিঁটে গিঁটে ব্যথা হলে চিকুনগুনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর মাংসপেশিতে ব্যথা হলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

চিকিৎসকরা জানান, এডিস মশাই এ রোগের বাহক। এ কারণে মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করতে হবে। হঠাৎ জ্বর আসার সঙ্গে গিঁটে গিঁটে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, মাংসপেশি ব্যথা, বমিবমি ভাব, চামড়ায় লালচে দানা হচ্ছে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

প্রাথমিকভাবে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত এডিস ইজিপ্টাই অথবা এডিস অ্যালবুপিক্টাস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ধরনের মশা সাধারণত ভোরবেলা অথবা সন্ধ্যার সময় কামড়ায়।

এই জ্বর ৩ থেকে ৭ দিন আবার ২ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। শুধু প্যারাসিটামল খেলে এবং স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া চালিয়ে রাখলে এই জ্বর নিজ থেকেই চলে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৭
এমএন/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।