একটা উদাহরণ দিই। ।
এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে কিছুটা উন্নতি ঘটলেও এক পর্যায়ে ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নিলেন, তার লিভার স্প্লিন কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমসি ভেলোর চেন্নাই হাসপাতালে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা গেল তার বোন ম্যারোতে ক্যান্সার টিস্যু। তবে লিভার ফাংশন ভাল। তিন মাস পর কিছুটা উন্নতি হলো। এক বছর চিকিৎসার পর এখন সেই ভাই ভাল আছেন।
প্রতিনিয়তই ভুল চিকিৎসা হয় আমাদের দেশে। অনেকে হয়তো অকালে ঝরেও পড়েন। তাই সঠিক চিকিৎসা পেতে বাধ্য হয়ে অনেকেই বিদেশের হাসপাতালে ছোটেন। অন্যসব দেশের তুলনায় কম খরচে উন্নত মানের চিকিৎসা দিচ্ছে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হাসপাতাল।
যেসকল হাসপাতালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমাহার বেশি সেখানে চিকিৎসার সফলতাও ততো বেশি। কেননা ডাক্তার যত বড় ডিগ্রিধারীই হোন, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রটি সর্বাধুনিক না হলে সমস্যা থেকেই যায়।
হার্টের রোগীদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করতে ২৫৬ স্লাইস মাল্টি ডিটেকটর সিটি কার্ডিয়াক এনজিওগ্রাম মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যাংকক হাসপাতাল। যা হয়তো অনেক দেশেই নেই। সেখানে এখন থ্রিডি ইমেজ ব্যবহার করা হচ্ছে হার্টের রোগ নির্ণয়ে।
এমআরআই ৩.৫ টেসলা, ওপেন এমআরআই করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ১ মাত্রার টেসলা (টেসলা হচ্ছে ছবির রেজুলেশন)। যা থাইল্যান্ডের অন্যসব অঞ্চলের হাসপাতালেও নেই। একারণে হার্টের রোগীদের আস্থায় জায়গা হতে পারে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হাসপাতাল।
ব্যাংককের সবচেয়ে বড় বেসরকারি নেটওয়ার্ক হসপিটাল ব্যাংকক হসপিটাল। বাংলাদেশের রোগীদের জন্য সেখানে রয়েছে বিশেষ সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একজন বাংলাদেশি। ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. শক্তিরঞ্জন পাল গত ২৬ বছর ধরে হাসপাতালটিতে সেবা দিচ্ছেন।
ক্যান্সার নির্ণয়ে পেট সিটি ফোর্থ জেনারেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। শরীরের কোথাও ক্যান্সারের জীবাণু থাকলে এই যন্ত্রে সহজেই ধরা পড়বে।
ব্যাংকক হাসপাতালে একান্ত আলাপচারিতায় ডা. শক্তিরঞ্জন পাল বাংলানিউজকে বলেন, আমি কখনোই বলি না এখানেই চিকিৎসা নিতে হবে। একটা কথা মনে রাখা ভাল, টেকনোলজি যার যত বেশি উন্নত ট্রিটমেন্ট অ্যাকুরেসি তার ততো বেশি।
তিনি বলেন, যত বড় ডাক্তারই হোন, আমাদের এখানে তাকে প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ টি সেমিনারে অংশ নিতেই হয়। সেসব সেমিনারে বিভিন্ন বিষয় শেখানো হয়। প্রতিনিয়ত চর্চার মধ্যে থাকতে হয়।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে হাসপাতালটির বেশ সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য যান ব্যাংকক হসপিটালে। এর আর একটি কারণ বিদেশ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে বাংলাভাষা জানা লোকের অভাব নেই। ডাক্তার থেকে শুরু করে সব সহযোগিতা ব্যাংককের বাংলাদেশ মেডিকেল সার্ভিস থেকেই দেওয়া হয়। একারণেই ব্যাংকক হাসপাতালের প্রতি রোগীদের আগ্রহ একটু বেশি। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত থাইল্যান্ডের প্রথম বেসরকারি এ হসপিটাল হার্টের রোগ ও ক্যান্সারের চিকিসার জন্য বিশেষায়িত। বাংলাদেশের জন্য রয়েছে ১৪ জন বাঙালি ডাক্তার, কর্মকর্তা। সুপরিসর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এ হসপিটালের রয়েছে তিনটি বিভাগ-- ব্যাংকক হার্ট হসপিটাল, ব্যাংকক ক্যান্সার হসপিটাল ও রিহ্যাবিলাইটেশন হসপিটাল। নিউরো, ডেন্টাল, মেডিসিন প্রভৃতি বিভাগেও রয়েছেন অভিজ্ঞ সব ডাক্তার।
ব্যাংকক হসপিটালের আরও তথ্য-সেবার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
ধানমন্ডি অফিস: ০১৯৫১১১১৮০৫, বনানী: ০১৯৫১১১১৮০১ ও চট্টগ্রাম: ০১৭৭৭৭৮২৫৫০ নম্বরে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
এসএম/জেএম