রোববার(০৭ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেন্টাল বিল্ডিংয়ের মিলনায়তন কক্ষে সাভারের ডায়ালাইসিস শাখার উদ্বোধনী আয়োজন করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের প্রধান নেফ্রোলজিষ্ট অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মামুন মোস্তাফী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ডা. লায়লা পারভীন বানু, ডায়ালাইসিস সেন্টারের সমন্বয়ক ড. মহীবুল্লাহ খন্দকার মঞ্জু।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি সন্ধ্যা রায়, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মনসুর মুসা, ভৌত ও গাণিতিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক হাসিন অনুপমা আজহারী, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মুর্ত্তজা আলী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডা. মনজুর কাদির আহমেদ প্রমুখ।
২৫ শয্যার এ সেন্টারে একত্রে প্রতি শিফটে আপাতত ১৮জনের ডায়ালাইসিস করা গেলেও সব মেশিনারী এসে পৌঁছলে দিনে চার শিফটে মোট ১০০ জন রোগী সেবা নিতে পারবেন।
প্রধান নেফ্রোলজিস্ট অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মামুন মোস্তাফী তার বক্তব্যে বলেন, পৃথিবীতে স্বল্প মূল্যে কিডনি ডায়ালাইসিস হয় বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
তিনি আরো বলেন, কম মূল্যে হলেও এখানে AAMI স্ট্যান্ডার্ড মেনেই ডায়ালাইসিস কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়। ইতোমধ্যে এই সেন্টারে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ এলেও আরো কিছু বাকি আছে যা এসে গেলে আরো বেশি সেবা দিতে পারবেন তারা।
এই সেন্টারের সমন্বয়ক বলেন, একবার ডায়ালাইসিস করতে ১৮০ লিটার পানি প্রয়োজন হয়। আমরা ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক রিভার্স অসমোসিস ওয়াটার পিউরিফায়ার স্থাপন করেছি। ডায়ালাইসিসে আমরা জিরো লেভেল ব্যাক্টেরিয়া কাউন্ট এ পৌঁছতে সক্ষম হয়েছি।
ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি’র প্রেসিডেন্ট নব্য উদ্বোধন হওয়া ডায়ালাইসিস সেন্টার পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি এর মান নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
গণবির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ঘোষণা দেন আগামী ১২ জুন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র নগর হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করা হবে। অতি দ্রুতই সংশ্লিষ্ট মেশিনারিজ পৌঁছে যাবে।
গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টার সামাজিক শ্রেনীভিত্তিক গণস্বাস্থ্য স্বাস্থ্যবিমা পদ্ধতিতে পরিচালিত। অতি দরিদ্র, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, অবস্থাপন্ন ও ধনী এই ছয়টি সামাজিক শ্রেণীতে রোগীদের ভাগ করে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। একেবারে বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস সুবিধা পান অতি দরিদ্রেরা এবং এরপর এই ফি ক্রমানুসারে নির্ধারিত আছে ১০০০, ১২০০, ১৮০০, ২৫০০ এবং ৩০০০ টাকা পর্যন্ত। ফি আলাদা হলেও সামাজিক সমতা রক্ষা করার জন্য একই মানের সেবা পাবেন রোগীরা।
২০১৭ সালের ১৩ মে মাসে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এই সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয় এবং এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে দুই লাখ ডায়ালাইসিস সেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে সাভার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ অনেক সময় অধিক দূরত্ব ও সময়ের কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে পারে না, তাই এর মাধ্যমে এই এলাকার লোকজন বিশেষভাবে উপকৃত হবে।
নবনির্মিত ডায়ালাইসিস সেন্টার পরিদর্শনের সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সাভারেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এ অঞ্চলের অনেক মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমের ফল আজকের এই গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই তাদের উদ্দেশ্যেই আমরা সাভারে নতুন ডায়ালাইসিস কেন্দ্র স্থাপন করলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৯
এএটি