প্রশাসন বিভাগ, চিকিৎসক, নার্স এবং ৩য়-৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ মোট ২৩৯টি পদের মধ্যে নিয়োজিত রয়েছে ১৯০টি পদ। শূন্যপদ আছে ৪৯টি।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পার্থসারথি দত্ত কাননগো বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখন কিছু চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। কিন্তু নতুন করে এখানে কোনো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাছে আবেদন করেছি। এ হাসপাতালের প্রশাসন এবং মোট চিকিৎসক পদ ৫৩টি। এর মধ্যে ৩৮টি পদ কর্মরত, অবশিষ্ট ১৫টি পদ শূন্য।
তিনি আরও বলেন, ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন ১২ জন। সিনিয়র কনসালটেন্ট ১০টি পদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন। অবশিষ্ট ৪ পদ শূন্য। সে শূন্যপদগুলো- চর্ম ও যৌন, চক্ষু, অ্যানেসথেসিয়া এবং কার্ডিওলজি। জুনিয়র কনসালটেন্ট ১১টি পদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন। অবশিষ্ট ৫ পদ শূন্য। সেই শূন্যপদগুলো- নাক-কান-গলা, ডেন্টাল, প্যাথলজি, চক্ষু এবং কার্ডিওলজি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে সিনিয়র কনসালটেন্ট যারা রয়েছেন এরা হলেন-সার্জারি বিভাগের ডা. সুব্রত কুমার রায়, অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. অলক রঞ্জন দাশ, গাইনি বিভাগের ডা. ফাতেমা মমতাজ রোজি, মিডিসিন বিভাগের ডা. আবু সাঈদ আবদুল্লাহ, নাক-কান-গলা বিভাগের ডা. এইচ এম এনামুল হক এবং শিশু বিভাগের ডা. এ জেড এম মতিউর রহমান।
১৫টি শূন্য পদের মধ্যে ৯টি শূন্যপদ কনসালটেন্টের। অবশিষ্ট ৬টি পদ হলো-প্যাথলজি ১টি, রেজিস্টার একটি, অ্যানেথেসিস্ট ১টি, ইমারজেন্সি মেডিক্যাল কর্মকর্তা (ইএমও) একটি, মেডিক্যাল কর্মকর্তা (এমও) একটি, রেসিডেনসিয়্যাল ফিজিশিয়ান (আরপি) একটি বলেও জানান ডা. পার্থসারথি দত্ত কাননগো।
২৫ জানুয়ারি (শনিবার) হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কক্ষে চিকিৎসকের উপস্থিতি নেই। আছে রোগীদের ভিড়। বিভিন্ন বিভাগের সামনে আগত রোগীরা দাঁড়িয়ে আছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, জুনিয়র কনসালটেন্টের মধ্যে রয়েছেন-সার্জারি বিভাগের আবু ইমরান, মেডিসিন বিভাগের ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ, গাইনি বিভাগের ডা. ফারজানা হক পর্ণা, অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের ডা. মো. আবু রায়হান। এছাড়াও আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) হিসেবে আছেন ডা. আহমেদ ফয়সল জামান।
সূত্র জানায়, নার্স ১৩০ জনের মধ্যে কর্মরত আছেন ১০৫ জন। অবশিষ্ট ২৫টি নার্সের পদ শূন্য। তৃতীয় শ্রেণির পদ ৩৪টির মধ্যে কর্মরত ৩০ জন। অবশিষ্ট ৪ পদ খালি। চতুর্থ শ্রেণির ২২টি পদের মধ্যে ১৭ জন কর্মরত এবং ৫টি পদ খালি।
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল হামিদ মাহবুব বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার কাজ শুরু গেছে। অথচ মৌলভীবাজারের মানুষ এ দিক থেকে বঞ্চিত। কারণ মৌলভীবাজারে কোনো মেডিক্যাল কলেজ নেই, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। আর হবিগঞ্জে হচ্ছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো অনুমোদিত হয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের মৌলভীবাজার হাসপাতালে সিসিইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট) এবং আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) এ দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চালু হওয়ার কথা ছিল। মেশিন ও নানান সরঞ্জামাদিও এসেছিলো, কিন্তু তা যথাসময়ে চালু না হওয়ার ফলে এগুলো অন্য জায়গায় চলে যায়। এখন হৃদরোগের কোনো জটিল রোগীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। এখানে কোনো চিকিৎসা হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
বিবিবি/এএটি