মঙ্গলবার (১০ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে বাংলাদেশে স্বর্ণকারদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকসের (ডিপিএইচআই) গবেষকদের পরিচালনায় এ গবেষণা করা হয়।
ঢাকার মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ ও তাঁতী বাজার, মানিকগঞ্জের শিভালয় উপজেলা ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার স্বর্ণকারদের নিয়ে এ গবেষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, মৃত স্বর্ণকারদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ২০ শতাংশ ছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত। অসংক্রামক রোগ বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, মৃতদের ৬৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস, ৩৫ শতাংশ হৃদরোগ এবং ২০ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গবেষণায় অর্ন্তভুক্ত ৭৫ শতাংশ স্বর্ণকারই দুই বা ততোধিক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
স্বর্ণকারদের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে আরও লক্ষ্য করা যায়, মৃতদের ৭০ শতাংশ নিয়মিত ধূমপান করতেন এবং ২০ শতাংশ ধোঁয়াহীন তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন। ৫০ শতাংশের মদপানের অভ্যাস ছিল।
গবেষণার সুপারিশে স্বর্ণকারদের মধ্যে ধূমপান, মদপানের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের আয়োজন করা ও দ্বিতীয় ধাপে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত স্বর্ণকারদের নিয়ে প্রতিরোধ করার উপায় আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে।
ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মো.শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও আইসিডিডিআর,বির এমেরিটাস গবেষক ডা. মো. ইউনুস। সভাপতিত্ব করেন ডিপিএইচআই বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ শরিফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. মোহাম্মদ তানভীর ইসলাম।
উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আপনাদের গবেষণা স্বর্ণকারদের মৃত্যু নিয়ে অনেক তথ্য দিয়েছে। একইসঙ্গে অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে আরও পূর্ণাঙ্গ ফলাফল আপনারা নিয়ে আসবেন।
উপ-উপাচার্য শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হলো গবেষণা। স্বর্ণকারদের নিয়ে এটি একটি ভালো গবেষণা।
এসময় তিনি স্বর্ণকারদের পরিবেশগত, পারিবারিক, আর্থিক অবস্থার বিষয়েও গবেষণায় তুলে ধরার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২০
এসকেবি/এবি