ঢাকা: ত্রুটি সারাতে বারবার তাগাদা দিয়েও কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় অবশেষে নষ্ট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনটি (ইভিএম) ফেরত চাইলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি ওই নষ্ট ভোটযন্ত্রটি সারাতে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর চিঠি দেয় ইসি।
এরপর গত ৭ মে কোনো দেশিয় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে আবারও ত্রুটি সারানোর এবং প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মেশিনটি পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো জবাব না আসায় ১ জুলাই প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য আবারও তাগাদাপত্র দেয় ইসি। এরপরও কোনো পাত্তা দেয়নি বুয়েট। এ অবস্থায় সোমবার (২৭ জুলাই) ত্রুটিপূর্ণ ইভিএমটি ফেরত দিতে বিআরটিসি’র পরিচালকে চিঠি দেয় ইসি। চিঠিটি পাঠিয়েছেন ইসির মেনট্যানেন্স ইঞ্জিনিয়ার মো. ইকবাল জাভীদ।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কোনো প্রতিবেদন পাঠানো হয়নি, তাই অনতিবিলম্বে ইভিএমটি ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করা হলো।
মূলত ২০১৩ সালের ১৫ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের ‘সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ’ কেন্দ্রে একটি ইভিএম মেশিনে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সে ইভিএম থেকে আর ভোটগণনা করা যায়নি। এজন্য ওই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ব্যবহার করে পুনরায় ভোট নেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ঝুঁকি নেয়নি ইসি।
২০১০ সালে এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন বিগত নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোটগ্রহণ প্রথা চালু করে। সে সেসময় বুয়েটের কাছ থেকে দু’দফায় ৫৩০টি ইভিএম প্রস্তুত করে নেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, যেহেতু বুয়েট ইভিএম তৈরি করেছে, তাই ত্রুটিও তারাই সারাতে পারবে। এজন্যই তাদের কাছে মেশিনটি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেনি।
এদিকে বুয়েটের অসহযোগিতার কারণে বিকল্প চিন্তা ভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন। ইসি কমিশনার জাবেদ আলীর মতে, বর্তমানে দেশের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফলে বর্তমান সনাতন পদ্ধতিতে (হাতে গণনা) এ বিরাট সংখ্যক ভোটারের ভোট গণনা সময়মতো সম্পন্ন করা দুরূহ কাজ। প্রয়োজনে ইভিএমকে সচল করতে ভারতের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে সিনিয়র নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবরক বলেন, বিদ্যমান ইভিএম দিয়ে কারচুপি রোধ সম্ভব নয়। তাই এটিকে পুনর্গঠন করা দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৫
ইইউডি/আইএ