ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে উদ্বোধন হলো কুয়াকাটায় অবস্থিত দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। 
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ডাক টেলিযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম উপস্থিত ছিলেন। কুয়াকাটা প্রান্তে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন, স্থানীয় সংসদসদস্য মাহবুবুর রহমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক প্রমুখ।

 


অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
 
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ আরো ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস  ব্যান্ডউইডথ পাচ্ছে। আর ট্রান্সমিশন চার্জ কম পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, পটুয়াখালী,  খুলনা ও ফরিদপুরের মানুষ অপেক্ষাকৃত কম খরচে ইন্টারনেট পাবেন।
 
নব্বই দশকের গোড়ার দিকে বিনে পয়সায় বাংলাদেশকে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ  হাসিনা  লেন, দক্ষিণ এশিয়ায় যখন সাবমেরিন ক্যাবল আসে  তখন  বাংলাদেশকে  বিনে পয়সায় এর সংঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব এসেছিলো। ১৯৯১ সালে একবার, ১৯৯৪ সালে  আরেকবার এ প্রস্তাব এসেছিলো। অথচ খালেদা জিয়া এটা নাকচ করে দেন।
 
শেখ হাসিনা বলেন, তখন খালেদা জিয়া বলেছিলো এটা করা যাবে না। এটা করলে আমাদের দেশের সব তথ্য পাচার হয়ে যাবে।  
 
সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হতে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাবমেরিন  ক্যাবল  কি  এটা আমার কাছে ব্যাখ্যা করে সজিব ওয়াজেদ জয়। সে এটার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে, যে এটা  আমাদের দরকার।  এটা হলে আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
 
শেখ হাসিনা বলেন, জয় সফটওয়ার এবং হার্ডওয়ার দুটো ব্যাপারেই কিন্তু এক্সপার্ট। তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে আমরা সার্বিক পরামর্শ নিতাম। আর আমি কম্পিউটার যে টুকু চালাতে পারি ওর কাছ থেকে শিখেছি।  
 
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করাতে ইন্টারনেটে যোগাযোগ আরো দ্রুত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামমেরিন ক্যাবলের কারণে ইন্টারনেট ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে যোগাযোগটা আরো সহজ হবে। আর এতে বিশেষ করেদক্ষিণালঞ্চলের মানুষ আরো উপকৃত হবে।
 
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার জীবনযাত্রা সহজ করে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা ঘোষণা করেছিলাম। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে ফেলেছি।  
 
তিনি বলেন, একাবারে দ্বীপাঞ্জল যেখানে সেখানেও আমরা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি, ডিজিটাল সেন্টার করেছি।
 
বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ জিবিপিএসের বেশি। এর মধ্যে ১২০ জিবিপিএস রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) মাধ্যমে আসে। বাকি ২৮০ জিবিপিএসআইটিসির ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করা হয়।
 
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হতে মোট ৬৬০ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হলেও ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়।
 
চাহিদার অতিরিক্ত মালয়েশিয়া, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, ভারতের সেভেন সিস্টার ও আসাম ব্যান্ডউইডথ নিতে চায় বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমেআসা অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ আমরা রফতানি করতে পারবো।
 
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের মেয়াদ ২০ থেকে ২৫ বছর।
 
তুরঙ্কের ইস্তাম্বুলে সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়ামের বৈঠকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ; কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে মাইটভাঙা আমখোলাপাড়ায় দ্বিতীয়সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশন। আর কুয়াকাটা পর্যটন মোটেলএলাকায় রয়েছে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বিচ ম্যানহোল।
 
কনসোর্টিয়ামের আওতায় সি-মি-ইউ-৫ সাবমেরিন ক্যাবলে দক্ষিণ-এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের ১৭ দেশের ১৯টি টেলিযোগাযোগ কোম্পানি সংযুক্ত হচ্ছে।
এর আগে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন ক্যাবল ‘সি-মি-ইউ-৪’ এ যুক্ত হয়, যার মাধ্যমে প্রায় ২৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের মেয়াদ আর মাত্র ১০ বছর আছে।
 
প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের খরচ চার বছরের উঠে আসে। ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে পারলে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের টাকাও কম সময়ে উঠে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

**অবশেষে চালু হচ্ছে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
এমইউএম/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।