ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বিআরটিএ’র সিদ্ধান্তে হতাশ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
বিআরটিএ’র সিদ্ধান্তে হতাশ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো

ঢাকা: প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর রাইড শেয়ারিং সেবা কার্যক্রম চালুর অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে চলাচলের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাত্র ২৫৫টি চার চাকার বাহনকে। সংস্থাটির এমন সিদ্ধান্তে হতাশ রাইড শেয়ারিং সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।

রোববার (২১ জুন) অনুমতিপ্রাপ্ত ২৫৫টি মোটরযান রাইড শেয়ারিং সেবার আওতায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে বলে জানায় বিআরটিএ। বিষয়টি অবহিত করতে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চিঠি দেয় সংস্থাটি।

তবে এ নির্দেশনায় টু-হুইলার অর্থ্যাৎ মোটরবাইকের রাইড শেয়ারিং সেবা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা-২০১৭’ অধীন এনলিস্টমেন্ট সনদ নেওয়া যানবাহনগুলোকেই শুধু চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি পাওয়া ২৫৫টি বাহনের মধ্যে ১৫টি উবারে এবং দু’টি পাঠাও’তে নিবন্ধিত। বাকিগুলোর মধ্যে পিকমির ৩২টি, সিএনএসের ৬১টি, ওভাই’র আটটি, ইজিয়ারের ১০০টি, আকিজ অনলাইনের তিনটি এবং সেজেস্টার ৩৪টি। মূলত চার চাকার মোটরকার, জিপ, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স ক্যাটাগরিতে এনলিস্টমেন্ট থাকা সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হয় বলে বাংলানিউজকে জানায় বিআরটিএ।

এদিকে, বিআরটিএ’র এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ রাইড শেয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন (বার্সা)। সংগঠনটির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেইন এম ইলিয়াস এবং সহজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ হতাশা ব্যক্ত করা হয়।

এতে বলা হয়, মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং বন্ধ রেখে শুধু ২৫৫টি ফোর- হুইলারের অনুমতি দেওয়ায় আমরা খুবই হতাশ। আমরা বিশ্বাস করি না যে, আমাদের বিপুল সংখ্যক গ্রাহকদের এ ক্ষুদ্র এবং সীমিত পরিসরের বহর দিয়ে যথাযথভাবে সন্তোষজনক সেবা দেওয়া সম্ভব। বিআরটিএ’র এমন সিদ্ধান্ত এ পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি আঘাত যেখানে এ খাত প্রচুর সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির যাত্রীদের চলাচলের স্বার্থ এবং যুবসমাজ যারা এ খাত থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের স্বার্থও আমরা এ সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হতে দেখি না।

বিআরটিএ’র এমন সিদ্ধান্তের জন্য দেশি পরিচালিত বহুজাতিক আরেকটি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনে বার্সা। কারও নাম উল্লেখ না করলেও বিবৃতিতে বলা হয়, একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এড়িয়ে রেগুলেটর (বিআরটিএ) প্রতি প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছে। এখানে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবহেলা করা হয়েছে।

সহজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির বাংলানিউজকে বলেন, সংস্থাটির এমন সিদ্ধান্ত খুবই হতাশাজনক। এ সিদ্ধান্ত মধ্যম আয়ের মানুষদের যাতায়াতকে আরও কঠিন করে তুললো। পরিবহন এমনিতেই সংখ্যায় কম এবং যখন ভাইরাস সংক্রমণের কথা আসে তখন গণপরিবহন আরও ঝুঁকিপূর্ণ।

এনলিস্টমেন্টের জন্য বিআরটিএ’র যে পোর্টাল আছে সেখানেও বেশকিছু কারিগরি জটিলতা আছে বলে দাবি করেন মালিহা কাদির। তিনি বলেন, তাদের যে এনলিস্টমেন্ট পোর্টাল আছে সেটা যথাযথভাবে কাজ করে না। পোর্টালে কিছু কারিগরি জটিলতা আছে। এর মাঝে লাখ লাখ যানবাহন ও চালক নিবন্ধনের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। আমাদের এর জন্য সময় দরকার। এমন প্রেক্ষাপটে এ সেবা বন্ধ রাখা একদিকে যেমন যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলছে তেমনি এ খাত থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর যারা নির্ভরশীল তাদের দুর্দশাও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
এসএইচএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।