ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গণহত্যার দায়ে এবার সু চির পুরস্কার বাতিল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৭
গণহত্যার দায়ে এবার সু চির পুরস্কার বাতিল অং সান সু চি (ফাইল ছবি)

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যার দায়ে প্রতিকৃতির পর এবার অং সান সু চিকে সম্মান প্রদর্শক পুরস্কার ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

নিজ দেশ মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৭ সালে তাকে এই সম্মাননা দিয়েছিল যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল। তবে এখন আর তার জন্য এটি ‘উপযুক্ত নয়’ বলেও কর্তৃপক্ষ মনে করে।

জাতিসংঘ ইতোমধ্যে বলেছে, মিয়ানমারে যা চলছে তা ‘জাতিগত নিধন’। এর জন্য অং সান সু চির ভূমিকাকে দায়ী করা হচ্ছে। সরকারের স্টেট কাউন্সেলর ও শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও তিনি রোহিঙ্গা নিধনে সায় দিচ্ছেন। কথা বলছেন সামরিক জান্তার ভাষায়।

যদিও চারিদিকে সমালোচনার পাশাপাশি সু চির নোবেল প্রত্যাহার করা হোক এমন দাবি উঠেছে। তবে নোবেল দেওয়া হয় পূর্বের অবদানের ওপর ভিত্তি করে। এতে বর্তমানের কোনো প্রসঙ্গ নেই বলে এটি প্রত্যাহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া রোহিঙ্গা নিধনে আন্তর্জাতিক গণ আদালতে ‍সু চির দোষ প্রমাণিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে সু চির প্রতিকৃতি গত মাসে সরিয়েছে অক্সফোর্ড। যুক্তরাজ্যের এই বিশ্ববিদ্যালয়টির সেন্ট হিউজ কলেজে তার প্রতিকৃতিমূলক ছবি ছিল। সু চি ১৯৬৭ সালে এখান থেকেই স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ওই কলেজ ২০১২ সালে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেয়। এর আগে ১৯৯১ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সোমবার (০২ অক্টোবর) বলেছে, এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা পাঁচ লাখ সাত হাজার ১২৫ জন। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই। কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল সেখানে কাজ করার সুযোগ না পাওয়ায় নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে না।

রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে সু চির প্রতিকৃতি সরালো অক্সফোর্ড

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।