সোমবার (২৭ নভেম্বর) ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রাসাদ ‘ক্লারেন্স হাউস’ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ‘বহুল প্রতীক্ষিত’ বিয়ের ঘোষণা দিয়েছে। রাজপ্রাসাদ এ-ও বলেছে, হ্যারি-মেগানের বাগদানও হয়ে গেছে এরইমধ্যে।
২০১৬ সালের জুলাই থেকে চুটিয়ে প্রেম করছেন ৩৩ বছর বয়সী ‘সুদর্শন তরুণ’ হ্যারি ও ৩৬ বছর বয়সী ‘গ্লামার গার্ল’ মেগান। তবে তারা পাপারাজ্জির ক্যামেরায় ধরা পড়েন গত সেপ্টেম্বরে। তারপর নানা সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে অংশ নিতে দেখা যায় দু’জনকে।
এ বিষয়ে ‘ক্লারেন্স হাউস’র বিবৃতিতে বলা হয়, সামনের বসন্তে (মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সময়) মেগানকে বিয়ে করবেন রাজসিংহাসনের পঞ্চম উত্তরসূরী প্রিন্স হ্যারি। বিয়ের পর তারা থাকবেন লন্ডনের আরেক রাজপ্রাসাদ কেনসিংটন প্যালেসের নটিংহ্যাম কটেজে। বিবৃতিতে যুবরাজ হ্যারি বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দু’জনের বাগদানের কথা জানাচ্ছি। মেগানের মা-বাবা আমাদের জন্য আশীর্বাদ করেছেন।
রাজপ্রাসাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানায়, লন্ডনে এই নভেম্বরেই অনেকটা গোপনে বাগদান হয় হ্যারি ও মেগানের। দুই হাত আংটি বদলে মিলে যাওয়ার এই ব্যাপারটি জানতেন কেবল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও রাজপরিবারের কিছু ঘনিষ্ঠ সদস্য।
‘ক্লারেন্স হাউস’র বিবৃতিতে বলা হয়, হ্যারি ও মেগানের বিয়ের আয়োজনের বিস্তারিত সময় মতো জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে সোমবার বিকেলেই কেনসিংটন প্যালেসের বাইরে গণমাধ্যমের সামনে ফটোসেশনের জন্য হাজির হবেন দু’জনে। সন্ধ্যায় তারা একটি সম্প্রচারমাধ্যমকে দেবেন সাক্ষাৎকার।
রানির রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসের মুখপাত্র জানান, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এই যুগলকে নিয়ে গর্বিত এবং তাদের সুখী জীবন কামনা করেছেন। হ্যারি-মেগানের বিয়ের খবরে উচ্ছ্বাসের কথা জানান যুবরাজ উইলিয়াম ও তার পত্নী কেট মিডলটন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, রাজপরিবারে বিয়ের সানাই বাজবে বলে দেওয়া ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী দারুণ উচ্ছ্বসিত। তিনি যুগলকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তাদের সুখী ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।
মেগানের মা সমাজকর্মী ও যোগব্যায়াম পরামর্শক ডরিয়া র্যাগল্যান্ড ও বাবা আলোক পরিচালক থমাস মারকেল এই যুগলের বিয়ের ঘোষণায় যারপরনাই খুশি। তারা বলেছেন, দু’জনকে নিয়ে তারা অবিশ্বাস্যভাবে খুশি।
প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানার কনিষ্ঠপুত্র হ্যারির পুরো নাম হেনরি চার্লস আলবার্ট ড্যাভিড। রয়্যাল মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করা হ্যারি ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন। তিনি আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর কমান্ডের সঙ্গে কাজ করে এসেছেন।
আর লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া মেগানের পুরো নাম রাচেল মেগান মারকেল। তিনি পড়াশোনা করেছেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে। ব্রিটেনের জনগণের কাছে অনেকটা অপরিচিত হলেও হলিউডে আছে মেগানের বেশ জনপ্রিয়তা। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সুটস’র এই অভিনেত্রী ২০১১ সালে বিয়ে করেছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক ট্রেভল এঙ্গেলসনকে। তবে দু’বছরের মাথায়ই তাদের বিয়ে ভেঙে যায়।
তবে এতোদিন ধরে ‘মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর’দের একজন থাকা হ্যারির সঙ্গে মেগানের এই বিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিয়ের একটি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছে সংবাদমাধ্যম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
এইচএ