বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের ওই আদালত এ আদেশ দেন। বন্দিদের সবুজ পোশাক পরিহিত এবং হুইল চেয়ারে বসা মানাফোর্টকে এজলাসে এসময় বিমর্ষ দেখা যায়।
নির্বাচনের বছর ২০১৬ সালের জুন থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন মানাফোর্ট। কিন্তু মস্কোপন্থি একটি ইউক্রেনিয়ান রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করা এ কর্মকর্তার সঙ্গে রাশিয়ার আইনজীবীর যোগাযোগের অভিযোগ উঠলে তিনি নির্বাচনের প্রায় আড়াই মাস আগে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
বিগত নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠার পর বিভিন্ন দফতর ও সংস্থা তদন্তে নামে। এতে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) ছাড়াও সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি, সিনেট ও হাউজ ইন্টিলিজেন্স কমিটি কাজ করছে। ওই তদন্তের জের ধরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এফবিআই প্রধান থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি পদের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত পর্যন্ত করেন।
সেই তদন্তেরই অংশ হিসেবে মানাফোর্ট মুখোমুখী নানামুখী জিজ্ঞাসাবাদের। ইউক্রেনিয়ার রুশপন্থি রাজনৈতিক একটি গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয়ের বিষয়টি গোপন করায় গত গ্রীষ্মেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অনৈতিক লবির কারণে সামনের সপ্তাহেই মানাফোর্টের বিরুদ্ধে আরেক মামলার রায় ঘোষণা অপেক্ষমান রয়েছে।
নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তে বিচার মন্ত্রণালয়ের নিয়োগকৃত বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলার ২২ মাসে যা খুঁজে পেয়েছেন তাও জানা যাবে সামনের সপ্তাহের ওই রায়ে। মুলারের এই তদন্তের ফলের ওপরই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির গদি ঝুলছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় ধনকুবের ও শিল্পপতি ট্রাম্পের লোকজন রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি-না, তা তদন্তের ধারাবাহিকতায় মামলাগুলোর রায় আসতে শুরু করেছে।
মানাফোর্ট অবশ্য যে ক’মাস ধরে রিমান্ড ভুগেছেন বা তদন্তকারীদের হেফাজতে আছেন, সে ক’মাস তার সাজার মেয়াদ থেকে বিয়োগ হবে। বাকি সময় তাকে কারাভোগ করতে হবে। তবে তাকে আরও ২৪ মিলিয়ন ডলার (২ কোটি ৪০ লাখ) ক্ষতিপূরণ এবং ৫০ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হবে।
রায় ঘোষণার সময় ৬৯ বছর বয়সী মানাফোর্ট আদালতকে উদ্দেশ্য করে তার জীবনকে বর্ণনা করেন ‘পেশাগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপর্যস্ত’ বলে। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছি গত দু’বছর। ’
যদিও ট্রাম্পের সাবেক এ ঘনিষ্ঠজন তার অন্যায় কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো দুঃখ প্রকাশ করেননি দেখে বিচারক টিএস এলিস বিস্ময় প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৯
এইচএ/