নির্বাচন কমিশন বলছে, এবার ফলাফল খানিকটা বিলম্বিত হতে পারে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আসনপ্রতি পাঁচটি করে বুথের ইভিএম আর ভিভিপ্যাটের ফল মেলানোর কথা।
গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৯ মে পর্যন্ত ৭ ধাপে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ৫৪২টি আসনে এ ভোটের আয়োজনে ভারতজুড়ে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। ৫৪৩টি আসনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
প্রায় ১৩২ কোটি জনগোষ্ঠীর ভারতে এবার ভোটার ছিলেন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন বা ৯০ কোটি। ভোটকেন্দ্র ছিল ১০ লাখেরও বেশি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন ৮১ কোটি ৪৫ লাখ ভোটার। এবার নতুন অর্থাৎ ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী ভোটার ছিলেন প্রায় দেড় কোটি। ২০১২ সাল থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী থেকে এবার ভোটার ছিলেন ৩৮ হাজার ৩২৫ জন। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ভোট পড়েছে ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
ভারতের সংসদ দ্বিকক্ষ-বিশিষ্ট। এরমধ্যে একটি হলো লোকসভা, এটি নিম্নকক্ষ; আরেকটি রাজ্যসভা, সেটি উচ্চকক্ষ। লোকসভায় মোট আসন ৫৪৫। এর মধ্যে ৫৪৩ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি দু’টি আসনে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান প্রতিনিধিকে মনোনীত করে আনা হয়। সরকার গঠনের জন্য লোকসভায় ২৭২ আসনের প্রয়োজন। রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা ২৫০। এরা রাজ্য বা অঞ্চলগুলোর বিধানসভার সদস্যদের ভোটে রাজ্যসভায় আসেন।
এবার নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ দফা ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন সংস্থা জানাতে থাকে বুথফেরত জরিপের (এক্সিট পোল) ফলাফল। বেশিরভাগ সংস্থার জরিপ মতে, এবারও নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি প্রায় ৩০০ আসন পেয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে। অর্থাৎ ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও বুথফেরত জরিপের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক দলগুলোর জোট ফেডারেল ফ্রন্ট। কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী সরাসরিই জরিপগুলোকে ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে নেতাকর্মীদের আত্মপ্রত্যয়ী থেকে ফলাফলে চোখ রাখতে বলেছেন। মাটি কামড়ে ফলের অপেক্ষা করতে বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায়ও।
তবে বুথফেরত জরিপ যা-ই হোক, পর্যবেক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববাসীও নজর রাখছে চূড়ান্ত ফলাফলের দিকে। কারণ এই ফলাফলই বলবে, আগামী পাঁচ বছর কারা চালাবে ভারত!
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন জয় পেয়ে সরকার গড়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবারের মতো একক দল হিসেবে সরকার গঠনের মতো আসন পেয়ে যায় বিজেপিই। পদ্মফুল ফুটেছিল ২৮২ আসনে। বিজেপি জোটের অন্য দলগুলো পেয়েছিল ৫৫ আসন। অন্যদিকে আগের সরকার চালানো সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পায় মাত্র ৪৪টি আসন। তাদের জোটের দলগুলো পায় ১৫ আসন। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস পায় ৩৪ আসন। তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার দল এআইএডিএমকে পায় ৩৭ আসন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
এইচএ/
** আগামী ৫ বছর কারা চালাবে ভারত?