ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নারী অপরাধীদের ধরতে তৎপর ইউরোপোল 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নারী অপরাধীদের ধরতে তৎপর ইউরোপোল 

গুরুতর বিভিন্ন অপরাধে সংশ্লিষ্ট ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নারী অপরাধীদের ধরতে নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপরাধ বিষয়ক সংস্থা ‘ইউরোপোল’। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি সর্বসাধারণের উদ্দেশ্যে নিজেদের একটি ওয়েবসাইটে নারী অপরাধীদের বিস্তারিত তথ্যসহ ভিন্ন মাত্রার প্রচারণাও চালিয়েছে তারা। 

এ প্রচারণার মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘অপরাধে কোনো লিঙ্গ নেই’, অর্থাৎ নারী বা পুরুষ যে কেউই গুরুতর অপরাধ করতে পারে। সাধারণত অপরাধী বলতেই পুরুষের চেহারা ভেসে ওঠে।

কিন্তু নারীও যে অপরাধে সক্ষম, এবং বিশ্বব্যাপী তা ঘটে চলেছে, এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই মূলত এ প্রচারণা।  

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে ভিন্ন আঙ্গিকের এ প্রচারণার ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, অপরাধী নারী না পুরুষ, যাতে বোঝা না যায়, সেজন্য শুরুতে সবার চেহারা মুখোশে ঢেকে রাখা হয়েছে। পাশেই দেওয়া আছে তাদের অপরাধের বিস্তারিত তথ্য। এ থেকে আন্দাজ করতে হবে- কার দ্বারা এসব ঘটেছে, কোনো নারী নাকি পুরুষ? 

পরবর্তীতে ধাপে ধাপে মুখোশ খুলে ওই অপরাধীদের প্রকৃত পরিচয় উন্মোচন করা হয়। এতে দেখা যায়, মোট ২১ অপরাধীর মধ্যে ১৮ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ।

অপরাধীদের শুরুতে মুখোশ পরা অবস্থায় দেখানো হয়।  ছবি- সংগৃহীত

নারী অপরাধীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- এলেনা পুজিরেভিচ। তিনি ৯ রুশ তরুণীকে স্পেনে পাচার করেন। সেখানে জোরপূর্বক ওই তরুণীদের যৌনকর্মী হতে বাধ্য করা হয়।  

আরেক অপরাধী ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা সাকজুকা। ৫ বছর আগে লাটভিয়ায় এক নারীকে তিনি পিটিয়ে নিহত করেন। মোস্ট ওয়ান্টেড হিসেবে পুলিশ বর্তমানে তাকে খুঁজছে।   

এ প্রচারণার ব্যাপারে ইউরোপোলের মুখপাত্র ক্লেয়ার জর্জেস বলেন, ২০১৬ সালে থেকে ‘ইইউ মোস্ট ওয়ান্টেড’ নামে ইউরপোলের এ ওয়েবসাইটটি কাজ করে যাচ্ছে।  পলাতক অপরাধীদের ধরতে এটি নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে।  

‘এবারের প্রচারণায় আমরা আসলে দেখাতে চেয়েছি যে, নারীরাও পুরুষের মতোই হিংস্র অপরাধ করতে পারে। যদিও সাধারণত পুরুষ অপরাধীদের নিয়েই আলোচনা হয়, কিন্তু নারীরাও সমান তালে খারাপ হতে পারে। ’

যদিও নারীরা বিভিন্ন অপরাধে সংশ্লিষ্ট, তবে পরিসংখ্যান অনুসারে বিশ্বের বেশিরভাগ অপরাধ সংঘটিত হয় পুরুষ দ্বারা।  

যুক্তরাজ্য সরকার অনুমোদিত চলতি বছরে প্রকাশিত এক গবেষণাতেই একই ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়। ওই গবেষণা অনুসারেও সংগঠিত বড় বড় অপরাধসহ বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধ পুরুষের নিয়ন্ত্রণেই ঘটে।  

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট’র ‘লিঙ্গ ও অপরাধতত্ত্ব’ বিশেষজ্ঞ ডক্টর মেরিয়ান দুগগান বলেন, নিশ্চয়ই যে কোনো লিঙ্গের মানুষই যে কোনো ধরনের অপরাধ করতে পারে। কিন্তু নারীর তুলনায় পুরুষ এক্ষেত্রে অনেক বেশি যুক্ত।  

অনেক সময়ই সংগঠিত অপরাধী চক্র নারীদের কাজে লাগায়। ইউরোপোলের প্রচারণায় অনেক নারী অপরাধীকেই যৌনতা বিষয়ক অপরাধ বা মাদক পাচারের অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে নারীদের কাজে লাগানোতে বেশি সুবিধা করা যায়। বিভিন্ন পুরুষ অপরাধীরা তাদের কাজে লাগায়। এ ধরনের ক্ষেত্রে এককভাবে কোনো নারীকে যুক্ত হতে দেখা যায় খুবই কম।  
  
সব মিলিয়ে পুরুষের অপরাধের মাত্রার সঙ্গে এখন পর্যন্ত নারীর অপরাধের মাত্রা তুল্য হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন মেরিয়ান দুগগান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।