ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

হংকং পলিটেকনিকে ৪ হাজার পেট্রোল বোমা পেলো পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
হংকং পলিটেকনিকে ৪ হাজার পেট্রোল বোমা পেলো পুলিশ হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে ৪০০০ পেট্রোল বোমা পেল পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে অভিযান চালিয়ে দু’দিনে প্রায় চার হাজার পেট্রোল বোমা পেয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যকার অচলাবস্থার অবসান ঘটে।

বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করায় পুলিশের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন।

এই দু’দিন অভিযান চালিয়ে তিন হাজার নয়শ’ ৮৯টি পেট্রোল বোমা, এক হাজার তিনশ’ ৩৯ ধরনের বিস্ফোরক, ৬০১ বোতল বিধ্বংসী তরল পদার্থ ও ৫৭৩টি অস্ত্র পেয়েছে তারা। ক্যাম্পাসের দায়িত্ব ইউনিভার্সিটি পরিচালকদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

দুই সপ্তাহ আগে পুলিশ যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সেখানে ব্যারিকেড দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে কর্তৃপক্ষ ইউনিভার্সিটি বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। এতে সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী ক্যাম্পাসের ভেতরেই আটক হয়ে পড়ে।

ক্যাম্পাস অবরোধকালে পুলিশ প্রবেশে বাধা দিতে বিক্ষোভকারীরা ইট, পেট্রোল বোমা, তীর-ধনুক ইত্যাদি দিয়ে হামলা চালায়। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী আত্মসমর্পণ করেছেন অথবা পালিয়ে গেছেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভের কারণে ১৩শ’ ৭৭ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা। এর মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় আটশ’ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে তিনশ’ ১৮ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম।

১৯ বছর বয়সী এলভিস এই ইউনিভার্সিটির ভেতর পাঁচদিন আটকেছিলেন। তিনি বলেন, সব চেয়ার-টেবিল দিয়ে আমরা ব্যারিকেড দিয়েছিলাম। সবাই মেঝেতেই ঘুমিয়েছে। কিন্তু সেটিই আরামদায়ক ছিল কারণ আমরা অনেক ক্লান্ত ছিলাম।

এলভিস বলেন, অনেকে ধরা পড়ে গেছে। আমরা তিনবার পালানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে ক্রমাগত কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ছিল। আমার মনে হয় না তারা চাচ্ছিল আমরা বের হতে পারি। দুঃস্বপ্নের মতো ছিল সবকিছু। সব জায়গা রক্তাক্ত ছিল।

সেসময় মেডিক্যাল টিম বা সংবাদকর্মীদের দেওয়া খাবার রান্না করে খেয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

এলভিস জানায়, দড়ি বেয়ে অনেক বিক্ষোভকারী পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়। ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়েছেন অনেকে। তবে, তা অনেক বিপজ্জনক ছিল।

শেষ পর্যন্ত পঞ্চমদিনে অসুস্থ অবস্থায় একটি স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক হংকং ও পুলিশি আচরণের তদন্তসহ পাঁচ দফা দাবিতে শুক্রবারেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে অঞ্চলটিতে।

চলতি বছরের জুন মাসে চীন প্রস্তাবিত একটি অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলে দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় চীনের আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে। অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে হংকংয়ে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে, তাকে ফেরত দিতে হবে। গত ২৩ অক্টোবর বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় হংকং আইনসভা। কিন্তু, এর আগেই বিক্ষোভটি রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।