ঢাকা, শনিবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

জানাজার নামাজে রুকু-সিজদা না থাকার কারণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৯
জানাজার নামাজে রুকু-সিজদা না থাকার কারণ

পৃথিবীতে মানুষের মতানৈক্যের শেষ নেই। কিন্তু শত মতবিরোধ সত্ত্বেও এই বিষয়ে একমত যে, মৃত্যু একদিন আসবেই। ‘জন্মিলেই মরিতে হয়।’ আর এই অমোঘ-অপরিবর্তনীয় নিয়মটি ধর্ম-বর্ণ নির্বেশেষে সবাই বিশ্বাস করেন। 

কোনো মুসলিমের মৃত্যু হলে তাকে কবরস্থ করাসহ কয়েকটি কাজ করা জীবিত মুসলিমদের কর্তব্য। তন্মধ্যে গোসল দেওয়া, কাফন পরানো ও জানাজার নামাজ পড়া ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জানাজার নামাজের সওয়াব
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজ পড়া পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কিরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি দাফন করা পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে, তার জন্য দুই কিরাত সওয়াব রয়েছে। ’ জিজ্ঞাসা করা হল, দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু?’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘দুই বড় পাহাড়ের সমান। ’ (বুখারি, হাদিস: ১৩২৪; মুসলিম, হাদিস: ৯৪৫)

জানাজার নামাজের নিয়ম
• জানাজা একধরনের নামাজ। এই নামাজ পড়ার নিয়ম হলো, ইমাম মৃতের বক্ষ বরাবর দাঁড়াবেন। (বুখারি, হাদিস : ১২৪৬)

• ইমামের পেছনে মুক্তাদিদের কাতার হবে। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩১০২)

• সবাই আল্লাহর ইবাদত হিসেবে জানাজার ফরজ আদায়ের নিয়ত করবে। (বুখারি, হাদিস : ১)

• এরপর তাকবিরে তাহরিমা বলবে এবং কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে। তারপর ছানা পড়বে। অতঃপর তাকবির বলে দরুদ পাঠ করবে। এই তাকবিরে হাত ওঠাবে না। তারপর তৃতীয় তাকবির বলে মৃত ব্যক্তি ও মুসলমানদের জন্য দোয়া করবে। তখনো হাত ওঠাবে না। তারপর চতুর্থ তাকবির বলবে। তখনো হাত ওঠাবে না। (দারাকুতনি : ১৮৫৩, ইবনে আবি শায়বা :   ৩/২৯৫)

• ইমাম তাকবির উচ্চৈঃস্বরে বলবেন এবং বাকি দোয়া-দরুদ অনুচ্চস্বরে পড়বেন। মুক্তাদিরা সবই অনুচ্চস্বরে পড়বে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৪, সুনানে কুবরা, হাদিস : ৭৪৩৩)

• অতঃপর ডান এবং বাঁ দিকে সালাম ফেরাবেন। (সুনানে কুবরা, হাদিস : ৭২৩৮)

সুতরাং জানা গেল যে জানাজার নামাজে রুকু ও সিজদা নেই। এর কারণ হলো—

এক. জানাজার নামাজ মৃত ব্যক্তির পক্ষে শুধুই সুপারিশ। আর রুকু-সিজদার কারণ ও উদ্দেশ্য এর বিপরীত। কেননা রুকু ও সিজদায় নিজের সর্বনিম্ন অক্ষমতা ও অপদস্থতা এবং আল্লাহ তাআলার সীমাহীন মর্যাদা, বড়ত্ব ও মহত্ত্ব প্রকাশ করা হয়। জানাজার নামাজে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও গুণাগুণ এবং অন্যদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। তাই জানাজার নামাজে রুকু-সিজদার বিধান দেওয়া হয়নি।

দুই. জানাজার নামাজ পড়া হয় লাশ সামনে রেখে। যদি অন্য নামাজের মতো জানাজার নামাজে রুকু-সিজদা করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধারণা হতে পারে যে লাশের উদ্দেশে বুঝি রুকু-সিজদা করা বৈধ। সুতরাং লাশ সামনে রেখে রুকু-সিজদা করলে শিরকের সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই মুসলিম উম্মাহকে শিরকি ধারণা থেকে বাঁচানোর জন্য জানাজার নামাজে রুকু-সিজদার বিধান দেওয়া হয়নি।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে ই-মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।