ঢাকা, শনিবার, ২ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ শাবান ১৪৪৬

ইসলাম

শবে বরাতেও যে দুই দল মানুষ ক্ষমা পাবে না 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
শবে বরাতেও যে দুই দল মানুষ ক্ষমা পাবে না  প্রতীকী ছবি

যথাযথ মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারা দেশে পবিত্র শবে বরাত পালিত হচ্ছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এশার নামাজে সারা দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লির ঢল নামে।

পাপ থেকে সর্বান্তঃকরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিষ্কৃতি লাভে স্রষ্টার পানে দু’হাত তুলে চোখের পানি ফেলছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

শবে বরাতে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীর দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন এবং বহুসংখ্যক মানুষকে ক্ষমা করে দেন এটা বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিসে পাওয়া যায়। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মধ্য শাবানের রাতে পৃথিবীবাসীর দিকে দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া তাঁর সৃষ্টির সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ১৩৯০)

কিন্তু এরপরও দুই দল মানুষকে এ রাতেও ক্ষমা করেন না পরম করুনাময়। তারা হলো, মুশরিক বা অংশীবাদী ও মুশাহিন বা হিংসুক।

১. মুশরিক

শিরকে লিপ্ত ব্যক্তিকে মুশরিক বলা হয়। শিরক মানে বিশ্ব জাহানের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা বা শরিক করা। মূর্তিপূজা, কবরপূজা, পীরপূজা ইত্যাদি যে কোনোভাবে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করা।

শিরক আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ। কোরআনে শিরকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জুলুম বলা হয়েছে এবং বিভিন্ন আয়াতে বারবার শিরক থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করলেও শিরক ক্ষমা করবেন না।  

আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। (সুরা নিসা : ৪৮)

শিরক যারা করবে, তাদের জন্য জান্নাত হারাম ঘোষণা করে আল্লাহ বলেন, আর যে আল্লাহর সাথে শরিক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। (সুরা মায়েদা: ৭২)

শবে বরাতে আল্লাহ তাআলা তার অনেক বান্দাকে ক্ষমা করে দিলেও যারা শিরক করে তাদের ক্ষমা করেন না।

২. মুশাহিন

মুশাহিন সেই ব্যক্তি যার অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা আছে। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী বা মুসলমান ভাইয়ের প্রতি শত্রুতা আছে। যে মানুষের অকল্যাণ ও অনিষ্ট কামনা করে।

ইসলাম সবার কল্যাণকামী হওয়ার নির্দেশ দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করতে নিষেধ করে। নবিজি (সা.) মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পরস্পর ভাই ভাই হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করো না, হিংসা করো না, সম্পর্ক ছিন্ন করো না এবং আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও। (সহিহ মুসলিম: ৬২৯৫)

ইসলামে হিংসা নিষিদ্ধ ও অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। হিংসার কারণে মানুষের নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। হিংসা নেক আমলসমূহ ধ্বংস করে দেয়, যেমন আগুনে লাকড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০৫)

হিংসা-বিদ্বেষে যার অন্তর কলুষিত থাকে, শবে বরাতে তাকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করেন না।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।