ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

বাঘমামা ঘাস খেলো (পর্ব-১) | মহিউদ্দীন আহ্‌মেদ

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৭
বাঘমামা ঘাস খেলো (পর্ব-১) | মহিউদ্দীন আহ্‌মেদ বাঘমামা ঘাস খেলো

শিয়াল: আরে কি বলছেন রাজা মশাই, এতো বেলা হয়ে গেছে অথচ আপনি এখনো পর্যন্ত নাস্তাই করেননি! কী অবাক কাণ্ড!
বাঘ: কী আর করবো পণ্ডিত সাহেব, হরিণরা বড্ড ধূর্ত। ধারণা করি, ওরা আপনাদের চেয়েও বেশি ধূর্ত হয়ে গেছে। আমাদের নাম-গন্ধ পেলেই কী যে এক চম্পট দেয়, সেকথা কী আর বলবো আপনাকে।

শিয়াল: বটে। কিন্তু আপনি হচ্ছেন বনের রাজা।

আপনার যথাসময়ে নাস্তা করা দরকার।
বাঘ: ঠিকই বলেছেন। কিন্তু হরিণ না হলে তো সকালে আমাদের মুখে কিছু রোচে না। আপনি জানেন সেকথা।
শিয়াল: তা বটে রাজা মশাই, আমি সবই জানি। যাইহোক, কথা বললে পেট ভরবে না; এই মুহূর্তে আপনার নাস্তা করা দরকার। সেকারণে আমি আপনাকে একটা প্রস্তাব করতে চাই, অবশ্য যদি আপনি অনুমতি করেনÑ
বাঘ: আপনি সর্বজনবিদিত পণ্ডিত। নির্দ্বিধায় যেকোনো প্রস্তাব পেশ করতে পারেন। অনুমতি দেওয়া হলো।
শিয়াল: আমার ঘরে কিছু বাসি খাবার আছে। আপনি চাইলে তা দিয়ে আজকের নাস্তাটা কোনোমতে চালিয়ে নিতে পারেন।
বাঘ: আগে বাসি খাবারের নামটি বলুন?
শিয়াল: বনমুরগীর হাড্ডি-গুড্ডি!
বাঘ: না না, তা সম্ভব নয়। আপনি ভালো করেই জানেন যে, আমি কখনো হাড্ডি-গুড্ডি খাই না।
শিয়াল: তাহলে আর কী করা! আমি দুঃখিত রাজা মশাই, আমি আমার প্রস্তাব ফিরিয়ে নিচ্ছি। আর এক্ষুণি যাচ্ছি আপনার জন্য হরিণের সন্ধান করতে। আপনি অপেক্ষা করুন। তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।
বাঘ: ধন্যবাদ পণ্ডিত জ্বি।

২.
শিয়াল: অ্যাই শোনো তোমরা! সবাই দাঁড়াও। আমি তোমাদের মস্ত বড় একটা উপকার করতে এসেছি।
হরিণ: কী উপকার করবেন পণ্ডিত জ্বি?
শিয়াল: আমি তোমাদের বাঘের হাত থেকে বাঁচাবো। হরিণের অভাবে সে এখনো নাস্তা করতে পারেনি। একটু পরে আসবে তোমাদের ঘাড় মটকাতে। কিন্তু তোমরা যদি আমার কথা শোনো, তাহলে তোমরা বেঁচে যাবে। আর বাঘও কিছুটা শাস্তি পাবে। কী বলো তোমরা?
হরিণ: তা হলে আপনার প্রতি আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আর বাঘকে শাস্তি দিতে পারলে তো খুবই ভালো হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের কী করতে হবে বলুন?
শিয়াল: তার আগে বলো, তোমরা আজ কখন যাবে ঝরনার জল খেতে?
হরিণ: সূর্য যখন ঠিক মাথার উপর আসবে।
শিয়াল: আচ্ছা ঠিক আছে। এবার তোমরা যেতে পারো।
হরিণ: পণ্ডিত জ্বি, বাঘের কথা শুনে বড্ড ভয় করছে।
শিয়াল: ভয়ের কিছু নেই। আমি এমন ব্যবস্থা করছি যে, বাঘ তোমাদের দেখাই পাবে না।


৩.
বাঘ: পেয়েছেন হরিণের সন্ধান?   
শিয়াল: জ্বি রাজা মশাই। দুপুর গড়িয়ে সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে কিঞ্চিৎ হেলে পড়বে ঠিক তখন হরিণরা ঝরনার জল খেতে যাবে।
বাঘ: আরে তাই নাকি? বড়ই সুসংবাদ। শুনে এখনই আমার জিহ্বায় জল এসে যাচ্ছে। কিন্তু দুপুর হতে যে এখনো অনেক দেরি। এতোটা সময় আমাকে উপোস থাকতে হবে?
শিয়াল: আপনি চাইলে একটি খাবার খেতে পারেন।
বাঘ: কী খাবার নাম বলুন?
শিয়াল: পাণ্ডা। চুপচাপ বসে থাকে। ঠাণ্ডা প্রকৃতির প্রাণী। শিকার করা খুব সহজ।

চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।