বৃহস্পতিবারের (১২ অক্টোবর) মধ্যেই এ বিষয়ে গেজেট হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য জানান তিনি।
দুপুর তিনটায় সুপ্রিম কোর্টে আসেন আইনমন্ত্রী। এরপর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির খাসকামরায় গিয়ে প্রায় পৌনে একঘণ্টা সাক্ষাৎ করেন। বের হয়ে ট্রাইব্যুনাল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটি শেষ (চূড়ান্ত) হয়ে গেছে। আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট পাবেন’।
গত ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে বিচারিক প্যানেলের সদস্য হিসেবে আছেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওয়ারদী।
সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান হবেন বিচারপতি মো.শাহিনুর ইসলাম। তবে চেয়ারম্যান পদে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নামও শোনা গিয়েছিলো।
বিচারপতি সোহরাওয়ারদীকে হাইকোর্টে ফেরত পাঠানো হতে পারে। আর হাইকোর্টের বিচারপতি আমির হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে নিয়োগে সম্মতি দিয়ে নাম পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। তিন সদস্যের মধ্যে বাকি একজনকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে সাবেক কোনো জেলা জজ থেকে।
সূত্রমতে, গত ১৫ জুন থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর সাবেক বিশেষ জজ মো. আবু আহমেদ জমাদার নিয়োগ পেতে পারেন এ পদে।
তিনি যদি নিয়োগ পান, তাহলে তিন সদস্যই হবেন সাবেক জেলা জজ। কারণ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম জেলা জজ থাকা অবস্থায় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান।
বিচারপতি আমির হোসেন গাজীপুরের জেলা জজ থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে স্থায়ী বিচারপতি হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি নিজামুল হককে চেয়ারম্যান, বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ কে এম জহির আহমেদকে সদস্য করে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
দুই বছর পর ২০১২ সালের ২৩ মার্চ বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরকে চেয়ারম্যান করে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শাহীনুর ইসলাম। ট্রাইব্যুনাল-১ এর শূন্য পদে সদস্য করা হয় হাইকোর্টের বিচারপতি আনোয়ারুল হককে।
২০১২ সালের মাঝামাঝিতে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য জহির আহমেদ পদত্যাগ করলে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে স্কাইপে আলোচনা নিয়ে বির্তক ওঠায় বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন। তার স্থলে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ফিরিয়ে আনা হয় বিচারপতি ফজলে কবীরকে।
এদিকে ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে চেয়ারম্যান করা হয়। আগের সদস্য বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলাম ছাড়াও সদস্য হিসেবে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়াকে আনা হয়।
বিচারপতি ফজলে কবীর অবসরে যাওয়ার পর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ পান। এ ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
পরবর্তীতে দুই নম্বর ট্রাইব্যুনালকে নিষ্ক্রিয় করে একটি করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সদ্য প্রয়াত বিচারপতি আনোয়ারুল হককে চেয়ারম্যান করা হয়। সদস্য হিসেবে রাখা হয় নিষ্ক্রিয় টাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক ও হাইকোর্টের বিচারপতি সোহরাওয়ারদীকে।
অন্যদিকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া হাইকোর্টে ফেরত যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
ইএস/এএসআর