ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শাজনীনের ঘাতক শহীদুলের ফাঁসি কার্যকর রাতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
শাজনীনের ঘাতক শহীদুলের ফাঁসি কার্যকর রাতে শাজনীন রহমান; ফাইল ছবি

গাজীপুর: ঢাকার গুলশানে শাজনীন তাসনিম রহমানকে তার নিজ বাড়িতে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকর করা হবে বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ইসলাম গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাঙ্গাদুর্গাপুর এলাকার সিদ্দিক মোল্লার ছেলে।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়, নিজ বাড়িতে শাজনীন তাসনিম রহমানের এই হত্যাকাণ্ড ছিল ঠাণ্ডা মাথায় খুন এবং যেখানে নিষ্পাপ ও অসহায় এক মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়, যা ছিল বিশ্বাসঘাতকতা ও কাপুরুষোচিত কাজ।

প্রায় দুই দশক আগে গুলশানের নিজ বাড়িতে শাজনীন তাসনিম রহমানকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন।

রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আসামি শহীদুলের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। ঘটনার সময় শাজনীনের বাড়ির গৃহভৃত্য ছিলেন আসামি শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান জানান, শাজনীন তাসনিম রহমানকে গুলশানে তাদের নিজ বাড়িতে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে শহীদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতেই কার্যকর করা হবে।

সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত ১০ টার সামান্য আগে বা পরে আসামি শহীদুলকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই রায় কার্যকর করা হবে। এজন্য হাইসিকিউরিটি কারাগারে আগে থেকেই ফাঁসির মঞ্চ পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিহত শাজনীন তাসনিম রহমান ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে  হত্যা করা হয় শাজনীন তাসনিম রহমানকে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ২০১২ সাল থেকে হাই সিকিউরিটি কারাগারে অন্তরীণ আছেন।

৫ মার্চ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আসামি শহীদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন।

এই মামলায় আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

রায়ে বলা হয়, অপরাধের ধরন থেকে দেখা যায়, আবেদনকারী (শহীদ) কোনো ধরনের সহানুভূতি পেতে পারেন না। মৃত্যুদণ্ড কমানোর মতো কোনো বিশেষ পরিস্থিতি ও রেকর্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রায়ে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে ১৫ বছর বয়সী ভাগ্যাহত শাজনীনকে তার শয়নকক্ষে ধর্ষণের পর অত্যন্ত অমানবিক ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যা ছিল তার জন্য অত্যন্ত নিরাপদ স্থান। আসামি ছিলেন ভিকটিমের গৃহভৃত্য। তাঁর দায়িত্ব ছিল পরিবারের সদস্যের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা দেওয়া, পরিবর্তে লালসার বশে এমনকি ১৫ বছর বয়সী শিশুকে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করতে কোনো দ্বিধা করা হয়নি। এটি ছিল ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।

শাজনীন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার হয় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালত শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে ছয় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন।

তাঁরা হলেন শাজনীনের বাড়ির গৃহভৃত্য শহীদ, বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান ও তাঁর সহকারী বাদল, বাড়ির গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭।
আরএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।