ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্থানীয়দের বিশ্বাস যাদুটোনা!

খাগড়াছড়িতে অসুস্থ ৩৮, চিকিৎসকদের ভাষ্য ‘গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ’

মিলন ত্রিপুরা, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১১
খাগড়াছড়িতে অসুস্থ ৩৮, চিকিৎসকদের ভাষ্য ‘গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ’

খাগড়ছড়ি: খাগড়াছড়িতে কথিত অজ্ঞাত রোগে এ পর্যন্ত ৩৮ জন অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৮জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



এ ঘটনায় স্থানীয়রা কর্ণজয় ত্রিপুরা (৫৮) ও কীর্তি কুমার নামে দু’জনকে আটক করেছে (৬০)। গ্রামবাসীর ধারণা, অসুস্থরা সবাই যাদুটোনার শিকার এবং এর জন্য কর্ণজয় এবং কীর্তিই দায়ি।

তবে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সঞ্জীব ত্রিপুরা জানিয়েছেন, এটি অজ্ঞাত কোনও রোগ নয়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘অসুস্থ ব্যক্তিরা সবাই গণমনস্তাত্ত্বিক (Mass Psychogenic Illness) রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ’

উল্লেখ্য, গত বৃস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের নতুনপাড়ায় এক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে খাবার খেয়ে হঠাৎ করেই অসুস্থ হযে পড়েন ৩৮জন। এদের অধিকাংশের বয়সই ১২ থেকে ১৮ এর মধ্যে।

এর মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে যে ৮জন ভর্তি হয়েছে তাদের ৭জনেরই বয়স ১৮-এর নিচে।  

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সঙ্গে আসা স্থানীয় অনে রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, ৩ ফেব্র“য়ারি রাত ৯টার দিকে তার পিতার বাৎসরিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে খাবার খাওয়ার পরই এই গণ অসুস্থতার ঘটনা ঘটে। এই অসুস্থদের মধ্যে তার নিজের ২সন্তানও রয়েছেন। তার মতে, গ্রামের কীর্তি কুমারের প্ররোচনায় ওঝা কর্ণজয় ত্রিপুরা অপবিদ্যার প্রয়োগে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন।   তিনি বলেন, ‘কর্ণজয় অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। ’

জানা গেছে, আজকালের মধ্যেই গ্রাম্য শালিসে এ দু’জনের বিচার হবে। বর্তমানে তারা গ্রাম্য মাতবরদের জিম্মায় আছেন।

এদিকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অসুস্থরা জানান, রোগাক্রান্ত হওয়ার পর তারা বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর দৃশ্য চোখে দেখেন। সবাই চান ঘর ছেড়ে চলে যেতে এবং চিৎকার-চেঁচামেচি করেন।

হাসপাতালে ভর্তি অনে ত্রিপুরার ছেলে করেন ত্রিপুরা (১৮) ও তার বোন করেন্তা ত্রিপুরা (১৭)জানান, অসুস্থ হওয়ার পর তাদের মাথায় যন্ত্রণা হয় এবং ঘরে থাকতে মন চায় না। মাথায় যন্ত্রণা হয় এবং অদ্ভূত মুখমণ্ডলের ছবি ভাসে চোখে।

এসব বিষয়ে ডা. সঞ্জীব ত্রিপুরার সঙ্গে কথা বললে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘অজ্ঞাত নয়, এটি জ্ঞাত একটি রোগ। গ্রামের কুসংস্কারপ্রবণ লোকজনের মধ্যে অযাচিত ভীতির কারণে এই গণমনস্তাত্ত্বিক রোগটি দেখা দিয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।