ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইলিশ রক্ষায় জাল পোড়াতে ব্যয় ৯শ’ কোটি টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
ইলিশ রক্ষায় জাল পোড়াতে ব্যয় ৯শ’ কোটি টাকা

ঢাকা: ইলিশ রক্ষায় কারেন্ট ও বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল পোড়াতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৭ উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এ তথ্য জানান।

সপ্তাহটির এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয়-‘জাটকা ইলিশ ধরবো না, দেশের ক্ষতি করবো না’।

প্রতিবছরের মতো এবারও ১১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ- ২০১৭ উদযাপন করা হচ্ছে।

এছাড়া বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আমতলী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও পায়রা নদীতে নৌ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ছায়েদুল হক বলেন, ইলিশের কাঙিক্ষত উৎপাদন না পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ কারেন্ট ও বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকা নিধন। এটি রোধ করতে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় ৯শ’ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। খুব শিগগিরই সংসদে প্রকল্পটির অনুমোদন হয়ে যাবে। তারপর সারাদেশে ইলিশ রক্ষায় জাল পোড়াতে অভিযান চালানো হবে।

তিনি জানান, ইলিশ রক্ষা করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও নোয়াখালীতে আইন রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় সম্মিলিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ অভিযানে ৫ জেলায় মোট ২৬৫টি মোবাইল কোর্ট ও ৪৮৯টি অভিযান পরিচালনা করে ৮৩৩টি বেহুন্দি জাল, ৩০.৬৯ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ৬৮৮টি অন্য জাল জব্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করে ৪৪ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে।

‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। বাংলাদেশের মৎস্য সেক্টরে একক প্রজাতি হিসেবে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ নবায়নযোগ্য মৎস্য সম্পদ। কেননা দেশে মোট মৎস্য উৎপাদনে প্রায় ১১ শতাংশ হচ্ছে ইলিশ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। এছাড়া উপকূলীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের প্রায় ৫ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণের সঙ্গে সরাসরি নিয়োজিত’- বলেন ছায়েদুল হক।
 
ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, বিগত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২.৯৯ লাখ মেট্রিক টন, সেখানে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৯৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময় ১ মাস বাড়িয়ে নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত এবং জাটকার দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার হতে বৃদ্ধি করে ২৫ সেন্টিমিটার উন্নীত করা হয়েছে।

কেবল জাটকা রক্ষা নয়, মা ইলিশ সুরক্ষা আইনটি সঠিকভাবে সংশোধনের ফলে মা ইলিশ নিরাপদে ডিম পাড়তে পেরেছে এবং তা মেঘনা থেকে বর্তমানে পদ্মা, যমুনা,  ব্রহ্মপুত্র, সুরমায় বিস্তার লাভ করেছে বলেও মন্তব্য করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকছুদুল হাসান খান, মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ ইয়াহিয়া মাহমুদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
এসজে/আরআইএস/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।