ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চারদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, হতাশ কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
চারদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, হতাশ কৃষক লক্ষ্মীপুরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষেত/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে গত চারদিনের বৃষ্টিতে সয়াবিন, তরমুজ, মরিচ ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে সয়াবিনসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থেমে থেমে চলে শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত। টানা বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর রামগতি কমলনগর ও রামগঞ্জসহ জেলার সর্বত্র আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সয়াবিনের মাঠ। সয়াবিন গাছের প্রায় ২৫ ভাগ ফলন পেকেছে। এখনো কাঁচা ৭৫ শতাংশ সয়াবিন। এ পরিস্থিতিতে ক্ষেতে পানির জমে থাকায় হতাশ কৃষক।

সয়াবিন ছাড়াও মাঠ জুড়ে রয়েছে-তরমুজ, মরিচ ও বাদামসহ রবি মৌসুমের বিভিন্ন ফসল। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে চর লরেন্স ইউনিয়নের গিয়ে দেখা যায়, মরিচ গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষেত থেকে পানি সরাচ্ছেন কৃষকরা। সয়াবিনের আবাদ বেশি হওয়ায় ক্ষেতের পানি সরাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।

চর মার্টিন গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নিজের ২৫ একর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে। সয়াবিন পাকতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। কিন্তু, এরই মধ্যে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তার সয়াবিনের ক্ষেত। পানি না কমলে অথবা ফের বৃষ্টি হলে সয়াবিনের ছড়া পচে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হবে।
লক্ষ্মীপুরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষেত/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমচরবসু গ্রামের কৃষক মো. সালাম, মহি উদ্দিন, সেলিম, নুর মোহাম্মদ, আবুল খায়ের ও রুহুল আমিন জানার, ২০ থেকে ২৫ জন কৃষক মিলে ১৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। গাছ ও তরমুজ এখন পানির নিচে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তাদের।

এদিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ, চর উভূতি ও রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তাদের ক্ষেতের বাদাম, সয়াবিন, মরিচ ও তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।

কমলনগর উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ছালেহ উদ্দিন পলাশ বাংলানিউজকে বলেন, পানির নিচে তলিয়ে থাকা সয়াবিন ও তরমুজের গাছ মরে যাবে। কৃষকদের ফসলের ক্ষেত থেকে পানি সরানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরা।

লক্ষ্মীপুর কৃষি অফিস (খামারবাড়ি) সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে লক্ষ্মীপুর জেলার ৫টি উপজেলায় ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রামগতিতে ১৮ হাজার ২০০, কমলনগর ১৬ হাজার ৩১০, রায়পুরে ৭ হাজার ৯৬০, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৯৫০ ও রামগঞ্জে ৮৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
ওএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।