ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
লক্ষ্মীপুরে ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে লক্ষ্মীপুরে ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে-ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে। চার দিনের ভারী বর্ষণে আবাদি জমির প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন পানির নিচে ডুবে গেছে। ফলে ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমায় মরে যাচ্ছে সয়াবিন গাছ। ডুবে থাকা সয়াবিনের চারায় পচনও লেগেছে।

অসময়ের এমন বৃষ্টি যেন কৃষকদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। এমন পরিস্থিতির কারণে সয়াবিন চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।

এমনকি এর প্রভাব পড়বে আগামী আমন মৌসুমেও বলে ধারণা করছে চাষীরা।

চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৯২ হাজার ৩৩৬ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের আবাদ হয়। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চাষ হয় সয়াবিনের। লক্ষ্মীপুরে ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে-ছবি: বাংলানিউজজেলায় মোট ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ করা হয়। কিন্তু গত চার দিনের ভারী বর্ষণে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন এখন পানি নিচে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সয়াবিন গাছের প্রায় ১০ থেকে ২০ ভাগ সয়াবিন পাকা। ক্ষেতে থৈ থৈ

বৃষ্টির পানি জমা। অব্যাহত বৃষ্টিতে বাড়ছে এ পানি। পানি সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে জমে থাকা পানির কারণে মরে যাচ্ছে সয়াবিন গাছ।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শনিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত  থেমে থেমে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে রামগতি উপজেলার চর সীতা, চর বাদাম, আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চর আবদুল্লাহ, কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, চর জাঙ্গালিয়া, চর কালকিনি, চর মার্টিন, চর লরেন্স, চর কাদিরা, চরবসু, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবনীগঞ্জ, চর উভুতি, আবিরনগর, লাহারকান্দি চর রমনিমোহন; এছাড়াও জেলার রায়পুর ও রামগঞ্জের বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল এখন পানির নিচে। এতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন বরি ফসল ডুবে যায়।

কৃষকরা জানায়, ৮/১০ দিন পর সয়াবিন কেটে ঘরে তোলা যেত। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানি শুকাতে শুকাতে সয়াবিন গাছ মরে যাবে; ফসল আর ঘরে তোলা যাবে না। লক্ষ্মীপুরে ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে-ছবি: বাংলানিউজবিভিন্ন ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষক, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় স্কুল শিক্ষকদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবাদি সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ বর্তমানে পানির নিচে রয়েছে। পানি নিচে থাকা সয়াবিন থেকে ১০ ভাগ ফসলও আশা করা যাচ্ছে না।

কমলনগর উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ছালেহ উদ্দিন পলাশ বলেন, গত চার দিনে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে খুব দ্রুত পানি কমার সম্ভবনা নেই। যে কারণে পানিতে থাকা সয়াবিন গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, শনিবার (২২ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ হাজর হেক্টর জমির সয়াবিনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তথ্য সংগ্রহ করছে। সব তথ্য হাতে আসলে সঠিকভাবে বলা যাবে কি পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে মোট ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রামগতিতে ১৮ হাজার ২০০ হেক্টর, কমলনগরে ১৬ হাজার ৩১০, রায়পুরে ৭ হাজার ৯৬০, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় সাত হাজার ৯৫০ ও রামগঞ্জে ৮৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমসি/এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।