ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া এখন সামাজিক আন্দোলনও

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া এখন সামাজিক আন্দোলনও বই পড়াকে সামাজিক আন্দোলনেও রুপ দিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আলোকিত বাংলাদেশ নির্মাণে পরিপূর্ণ ও আলোকিত মানুষ গড়তে প্রায় চার দশক ধরে কাজ করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। জাতীয় চিত্তের সামগ্রিক আলোকায়নে বই পড়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি রাজধানীর বাংলামোটরে কেন্দ্রের নিজস্ব কমপ্লেক্সে গড়ে তোলা হয়েছে সুবিশাল সংস্কৃতি ভবন।
 

এ ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ৪ হাজার ২০০ বর্গফুট জুড়ে রয়েছে পৌনে দুই লাখ বই সমৃদ্ধ ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাগার। সেখানে রয়েছে সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বাংলা ও ইংরেজি বইয়ের অনবদ্য সংগ্রহ।


 
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, চতুর্থ তলার সুবিস্তৃত লাইব্রেরিতে একসঙ্গে ৫০/৬০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে পড়ছিলেন ১০/১২ জন শিক্ষার্থী। তাদের বেশিরভাগই আবার দৈনিক পত্রিকা পড়ছেন।
 
 ৪ হাজার ২০০ বর্গফুট জুড়ে রয়েছে পৌনে দুই লাখ বইয়ের সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার।  ছবি: বাংলানিউজবিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক (প্রশাসন) তানভির আহমেদ রাজু বলেন, ‘গড়ে সব সময় ৩০/৪০ জন পাঠক লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেন। পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা বাসায় বই নিয়েও পড়েন। আর নির্ভেজাল আড্ডা দিতে অনেকে ভিড় জমান ক্যাফেটেরিয়ায়’।

বই পড়তে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ছাত্র ইয়াতসিংহ শুভ বলেন, ‘আজ ভিড় কম, অন্যদিন বেশি থাকে। বিশেষ করে ছুটির দিন। তবে নবম তলার ছাদের ক্যাফেটেরিয়া সব সময় ভরপুর থাকে। যেহেতু লাইব্রেরিতে কথা বলা যায় না, শব্দ করা যায় না, আড্ডা দেওয়া যায় না, সেহেতু পড়ুয়ারা  ছাড়া এখানে কেউ ঢোকেন না’।

ক্যাফেটেরিয়ায় গেলে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী সোমাইয়া শরিফ শাওন ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টসের (সিএ) শিক্ষার্থী মো. আকরামু্জ্জামান শুভ জানান, তারা কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নালোড়ন’-এ। সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য মাঝে-মধ্যে এ ক্যাফেটেরিয়ায় এসে বসেন।
 
ভয়াবহ শব্দ ও বায়ু দূষণের ঢাকায় এই নিরিবিলি জায়গাটিকে অনেকেই সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজকর্মের জন্য বেছে নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তারা।

শাওন বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই এখানে আসি। আড্ডা দেই, গল্প করি। সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনাও হয়’।
 
শুভ বলেন, ‘এমন সুন্দর পরিবেশ তো ঢাকায় পাওয়া যায় না। তাই চলে আসি। তবে অনেকে শুধুই আড্ডার জন্যও আসেন’।

ক্যাফেটেরিয়ায় আড্ডার সঙ্গে চলে সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমও।  ছবি: বাংলানিউজবেশকিছু সংগঠনেরও নিয়মিত মহড়া-অনুশীলনেরও স্থান এটি। মিলনায়তনগুলোতে নানা আয়োজনে আসা অনেকেও খাওয়া-দাওয়া করতে এসেছেন। খোলা টেবিল, বিস্তৃত খোলা আকাশ, ছাদের দেয়ালে লেপ্টে থাকা গুল্ম-বৃক্ষাদি ছাড়াও রমনা পার্কের সবুজ বৃক্ষ ও সিটি স্কাইলাইনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে কম দামে মুখরোচক খাবার সহযোগে অনেককে আড্ডা-গল্পেও মেতে থাকতে দেখা গেছে।
 
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সূত্র জানায়, এখানে আসা ৩০/৪০ শতাংশ মানুষ বই পড়তে বা বই নিতে আর ৬০/৭০ শতাংশ মানুষ অন্যান্য কাজ ও আড্ডা-গল্প করতে আসেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
এজেড/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।