এ অবস্থায় আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিস (আইডিইএ) বা স্মার্টকার্ড প্রকল্পের ৫০ শতাংশ অর্থই ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা বলছেন, আইডিইএ প্রকল্পের দাতা সংস্থার কাছ থেকে ধাপে ধাপে প্রায় ৫০ শতাংশ অর্থ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় এ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। সে সময় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার চুক্তি করেছিল কমিশন। যেখানে ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড সরবরাহ করার কথা ছিল ২০১৫ সালের মধ্যে। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বিতরণ তো দূরের কথা, এই সময়ের মধ্যে সব স্মার্টকার্ড প্রস্তুতই হবে না। তাই স্মার্টাকার্ড প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইসি সচিবালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, প্রকল্পের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৪৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। যেখানে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৬৯৪ দশমিক ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ, অবশিষ্ট ৫০ শতাংশের বেশি অর্থ ফেরত যাবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিশ্ব ব্যাংকের কাছে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেব। তারা না মানলে সরকারের তহবিল থেকেই কাজ শেষ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি সরকারের সে সক্ষমতা রয়েছে। ঋণ নিয়েই করতে হবে তা নয়। আর এটা তো কনটিনিয়াসলি করতেই হবে।
জানা যায়, ১৮ মাসের মধ্যে ৯০ মিলিয়ন স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ফ্রান্সের অবার্থার নামে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ২৮ মাস হয়ে গেলেও কার্ড প্রস্তুতের কাজ শেষ করতে পারেনি কোম্পানিটি। সম্প্রতি জুনের মধ্যেই সব কার্ড হস্তান্তর করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
সংস্থাটির সচিব বলেন, আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা গ্রাম পর্যায়েও বিতরণে যেতে পারবো। এছাড়া জুনের মধ্যেই অবার্থারকে কার্ড সব দিতে বলেছি। আর আমরাও সেই কার্ড কাস্টমাইজেশনের কাজ দ্রুত করতে আরও মেশিন কিনছি। দিনে রাতে তিন শিফটে কাজ করা হবে।
এদিকে সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আমরা খুব ভালো একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। টাকাটা ফেরত গেলে খুবই কষ্টকর হবে। কেননা টাকা ফেরত গেলে সরকারের তহবিল থেকে তা ব্যয় করতে হবে। যা সরকার অন্য কোনো জনকল্যাণে কাজে লাগাতে পারবে। কাজেই এটা রাষ্ট্রের ক্ষতি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
ইইউডি/ওএইচ/এএ