বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) স্টকহোম সফরত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের সর্ম্পক আরো গভীর ও বিস্তৃত করতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
স্টকহোমে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাণিজ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বৈশ্বিক সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিষয়ে আলোচনা হয়। সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত হয় এ বৈঠকে।
স্তেফানের আমন্ত্রণে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের কোন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুইডেন সফর করছেন শেখ হাসিনা।
শহীদুল হক জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর ফলপ্রসু দ্বিপাক্ষিক আলোচনার শেষের দিকে শেখ হাসিনার সফর প্রসঙ্গে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের সর্ম্পকের উন্নতির পরবর্তী ধাপ উন্মোচন করলো।
স্তেফান লোফভেন আরও বলেন, আমাদের সর্ম্পক গভীর ও বিস্তৃত করার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদী সর্ম্পদের দ্বার উন্মোচিত হলো।
শহীদুল হক জানান, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি, প্রযুক্তি ও ইনোভেশন, ‘স্মল সিটি, স্মার্ট সিটি’ সহ বাণ্যিজ্য-বিনিয়োগ ও সহযোগিতার কয়েকটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন।
বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্ত্বায় সুইডেন কিভাবে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রযুক্তি ও ইনোভেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা কালে স্তেফান বলেন, দুই দেশের বাণিজ্যে অনেক সম্ভবনা আছে।
সুইডেন ‘স্মল সিটি, স্মার্ট সিটি’ বা ছোট আধুনিক, ছিমছাম শহরের একটা ধারণার বিকাশ করেছে। দেশটি এ ব্যাপারে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশকে সহযোগিতা করে। কিভাবে বাংলাদেশে ‘স্মল সিটি, স্মার্ট সিটি’ করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন অন্যতম। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি বৈঠকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আলাপে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের ৭.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠেই ছিলো বাংলাদেশে তৈরি পোষাক খাতে যেসব উন্নয়ন হয়েছে তার কথা।
বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিযোগের সম্ভবনার কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথা উল্লেখ করেন।
সুইডেন উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে টিম করে ২০৩০ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে চায়। এক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশকে চিহ্নিত করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
শহীদুল হক আরও জানান, শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে বাংলাদেশে সরকার, শ্রমিক ও মালিক সমন্বয়ে গঠিত কমিটিকে কারিগরি সহযোগিতা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সেখানে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণিজ্যে বাংলাদেশ-সুইডেন খুলতে পারে নতুন দিগন্ত
বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৭
এমইউএম/এমএমকে