চলমান হজ ফ্লাইট সংক্রান্ত জটিলতাসহ নানা বিষয় নিয়ে বুধবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ‘বলাকা’য় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, হজ ফ্লাইট বাতিল নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
‘হজ ফ্লাইট বিপর্যয়ের দায়ভার কার- তা নিয়ে আমি কোনো কথা বলবো না। এজেন্সিগুলো সমন্বহীয়নভাবে বাড়িভাড়া করেছে, যে কারণে ফ্লাইট বিপর্যয় হচ্ছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে চলে না যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। ’
সৌদি সরকারের কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভিসা জটিলতা, সৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি এবং টানা দ্বিতীয়বারের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি বাড়ার ফলে এবছরের হজযাত্রায় জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে।
যাত্রী না পাওয়ায় বুধবার (০৯ আগস্ট) পর্যন্ত মোট ১৯টি হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান, এসব ফ্লাইটে সাড়ে আট হাজার যাত্রী জেদ্দা যেতে পারতেন। এর বাইরে হজযাত্রী পরিবহনের দায়িত্বে থাকা সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সেরও চারটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
বিমানের এমডি মোসাদ্দিক বলেন, ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় বিমানের ৯ হাজার ৮৮৭ জন ক্যাপাসিটি লস হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তবে এটাকে ক্ষতি বলবো না, কারণ এ আয় থেকে আমাদের খরচও হত।
‘আর হজযাত্রীদের নিয়ে এ পর্যন্ত ৭০ টি ফ্লাইট জেদ্দায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে ২৪ হাজার ১১৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করেছি আমরা। ’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখনও আমাদের যে সক্ষমতা আছে তাতে আমরা মোট ৫৮ হাজার ৯১৩ জন হজযাত্রী পরিবহন করতে পারবো। তাছাড়া বাড়তি আরও ১৪ স্লটের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি এর অনুমতিও আমরা পেয়ে যাবো। ’
তবে বাড়তি ১৪টি স্লটের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭টি স্লট ব্যবহার করা যাবে বলে জানান মোসাদ্দিক আহমেদ।
তিনি জানান, আগামী তিনদিনে ১২টি হজ ফ্লাইট রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ফ্লাইট ঝুকিপূর্ণ, যাবে কি- যাবে না তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
প্লেনের টিকিট সিন্ডিকেট সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে বিমানের প্রধান নির্বাহী বলেন, বিমানের টিকিট নিয়ে সিন্ডিকেটের প্রশ্নই আসে না। টিকিট সংগ্রহের বিষয়ে আমরা হজ এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে চাহিদা আহ্বান করি, তখন ১১৫ টি এজেন্সি আবেদন করে।
‘যারা আবেদন করেছে তাদেরই টিকিটে দেবো। এক্ষেত্রে কোনো এজেন্সির সক্ষমতা কতটুকু তা দেখেই আমরা টিকিট বরাদ্দ দিয়েছি। সেক্ষেত্রে কেউ কম টিকিটে পেয়েছে কেউ বেশি। কারণ সবার সক্ষমতা এক নয়। এ বিষয়ে কোনো জটিলতা নেই। আমরা আশাবাদী শেষ পর্যন্ত সব যাত্রীই হজে যেতে পারবেন। ’
অন্যদিকে যেসব এজেন্সি বুকিং দিয়েও হজ ফ্লাইটে যাত্রী দেয়নি তাদের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিমান এমডি এ এম মোসাদ্দিক।
তিনি বলেন, যেসব এজেন্সির কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে তাদের নজরে রাখা হয়েছে। সৌদিয়া এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স যেমন টিকিট বুকিং দিয়ে বাতিল করলে জরিমানা করে আমরাও তেমনটা ভাবছি।
আগামীতে কোনো এজেন্সির জন্য যদি জটিলতা তৈরি হয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৭/আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা
ইউএম/এমএ