পবা-মোহনপুরে ঈদ শুভেচ্ছা, নববর্ষের শুভেচ্ছার ফেস্টুন, পোস্টার টানিয়ে এরইমধ্যে নির্বাচনী মাঠে থাকার আভাস দিয়েছেন তৃণমূল থেকে উঠে আসা ‘আত্মপ্রত্যয়ী’ এ নেতা। কোনো মিথ্যে আশ্বাস বা কথার ফুলঝুঁরি নয়, বাস্তবতার নিরিখেই নিজেকে যোগ্য প্রার্থী মনে করছেন প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
পবা-মোহনপুরে এগিয়ে আয়েন, ‘ফ্যাক্টর’ মোল্লা!
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলানিউজের ‘ভোটের মাঠে নতুন মুখ’-এর বিশেষ আয়োজনের অংশ হিসেবে শুক্রবার দুপুরে কথা হয় মানজালের সঙ্গে। পবার নওহাটা বাজারে নিজ ভবনে খোলামেলা আলোচনায় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, নির্বাচনে আগ্রহের কারণ, অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, নির্বাচনের প্রস্তুতি, রাজনীতির সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা, এলাকার সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় বেশ খানিকটা সময় পার করেন।
আলোচনায় আরো উঠে আসে দলের প্রতি ভালোবাসা হিসেবে তার কাজের চিত্র, প্রার্থী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা, তার প্রতি নেত্রীর ভালোবাসাসহ বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনা।
দলের জন্য কিছু করার প্রত্যাশা থেকেই নির্বাচনের মাঠে নামছেন জানিয়ে তৃণমূল রাজনীতি থেকে উঠে আসা তরুণ রাজনীতিক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল বলেন, কর্মীদের মনের কথা বুঝে, পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করতে চাই।
এরইমধ্যে কয়েকজন প্রার্থী দলীয় প্রতীকে গণসংযোগ করেছে, বিষয়টি একবারেই ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রার্থী মনোনয়নের আগে এ ধরনের প্রচারণার পক্ষে আমি নই। তার আগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দল সংগঠিত করা।
এলাকার উন্নয়নে সবসময় সক্রিয় থেকেছেন দাবি করে তিনি বলেন, চক্ষু শিবির করেছি, মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজের উন্নয়ন, মাদকবিরোধী কাজে অংশগ্রহণ রয়েছে। এছাড়া নিজের একটি নাট্য সংগঠনের মাধ্যমে তরুণদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ সময় মাদককে তিনি উপজেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন।
বহুদিন ধরে নির্বাচন করার আকাঙ্ক্ষা মনের মধ্যে লালন করলেও এবার তার বহিঃপ্রকাশের বিষয়ে যুক্তি হিসেবে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা বলেন মানজাল। তিনি বলেন, আবেগ বা ভুয়া কথা নয়, কখনো কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করিনি। তৃণমূলে কর্মীদের নিয়ে সবসময় সচেষ্ট থেকেছি। সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছি। এটাই আমার বড় যোগ্যতা।
সদা হাস্যোজ্জ্বল ও বিনয়ী এ নেতা আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ‘বড় ফ্যাক্টর’ মানছেন। তৃণমূলে কাজ করার কারণে আগামী নির্বাচনে তরুণদের সহজেই কাছে পাবেন বলে বিশ্বাস তার।
অন্য মতাদর্শের রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী মানজাল বলেন, বিএনপি দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি করছে না। আর জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওয়ের কারণে মানুষ তাদের সহ্য করতে পারছে না। তার উপর যুদ্ধাপরাধী ‘ইস্যুতে’ দলটি ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে।
’৯৫ সালের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার সময় ছাত্রদলের বোমার আঘাতে বাম হাতের তিন আঙুলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনো হাতের ব্যথা তাকে পীড়া দেয়। তবে চিকিৎসার্থে নেত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করেন মানজাল। নেত্রী যে তার খোঁজ খবর নিয়েছেন এ সময় তাও জানান মানজাল।
নির্বাচনে জয়ী হতে হলে শুধু রাজনৈতিক পরিচয়টা মুখ্য নয় মন্তব্য করে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা কতখানি সেটিও দেখার বিষয় বলে মনে করেন মানজাল। দু’টো বিষয়ের মিশেলে একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ইমেজ তৈরি হয় বলে মত তার।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও তৃণমূলে সম্পৃক্তদের প্রাধান্য দেওয়া হবে; কেন্দ্রের এমন বার্তা তার কাছে আর্শীবাদস্বরূপ। কারণ তৃণমূল কর্মী সম্পৃক্ততাই মূল শক্তি মনে করেন দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়া মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল।
প্রযুক্তিবান্ধব তরুণ এ নেতা বর্তমানে রাজশাহী সেনানিবাস সংলগ্ন তেরখাদিয়ায় আলহাজ সুজাউদ্দৌলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। রয়েছে মাছের খামার, বাগানসহ বিভিন্ন ব্যবসা। যা দিয়ে নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর এমপি নির্বচিত হলে মাদকবিরোধী অভিযান হবে মোস্তাফিজুর রহমান মানজালের প্রথম ও প্রধান কাজ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
জেডএস/জেডএম