ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় সর্বহারা পার্টির পোস্টারিং, আতঙ্ক জনমনে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
বগুড়ায় সর্বহারা পার্টির পোস্টারিং, আতঙ্ক জনমনে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির পোস্টারিং। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর বাজারে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির পক্ষে পোস্টারিং করা হয়েছে। এসব প্রচারণায় গ্রামভিত্তিক ‘গণযুদ্ধ’ গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়েছে।

 

বহুবছর পর হঠাৎ এ ধরনের পোস্টারিং দেখে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। তবে পুলিশ বলছে, আতঙ্কের কিছু নেই। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর  এ ধরনের পোস্টারিং করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে সর্বহারা পার্টির সদস্যরা।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর বাজারে বিভিন্ন দেয়ালে সর্বাহার পার্টির পোস্টারিং করতে দেখা যায়।

ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোলজার হোসেন ও আলমগীর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ভবানীপুর বাজারে চা পান করতে এসে বিভিন্ন দোকানের দেয়ালে পোস্টার দেখতে পাই। কয়েক বছর পর হঠাৎ করে সর্বহারার পোস্টারিং  দেখে গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।  

পোস্টারে বিভিন্ন লেখার মধ্যে রয়েছে, ‘সর্বহারা পার্টির জাতীয় কংগ্রেস ২০২৪-এর ডাক; বিপ্লবী গণক্ষমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রাখুন’, ‘মাওবাদীগণ,ঐক্যবদ্ধ হোন’, ‘পূর্ব বাংলার মাওবাদী আন্দোলনের ৫ দশক অভিজ্ঞতার সার সংকলন করুন’, ‘নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব-জিন্দাবাদ’, ‘গণযুদ্ধ জিন্দাবাদ!’

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে ভবানীপুর বাজার এলাকায় সর্বহারা পার্টির তৎপরতা দেখা যায়। তারা এ ধরনের পোস্টারিং করে অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে গোপনে মোটা অংকের চাঁদা নিয়ে থাকে। এছাড়া তারা ডাকাতিও করে থাকে।

২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল রাতে ভবানীপুর বাজারে ১৫-২০ জনের একটি দল পোস্টারিং করার সময় টহল পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। তখন সর্বহারা সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে শেরপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নান্নু মিয়া (৩৮) ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনার পর ২৬ এপ্রিল রাতে ভবানীপুর বাজারে পুলিশের সঙ্গে ‘ক্রসফায়ারে’ আফসার (৪০) ও লিটন (২৮) নামের সর্বহারা পার্টির দুই সদস্য নিহত হন। এর পরপরই ভবানীপুর বাজারে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। কয়েক বছর সর্বহারাদের তৎপরতা বন্ধ থাকে।

স্থানীয়রা আরও জানান, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মাঝেমধ্যেই ভবানীপুর বাজারে গভীর রাতে অচেনা লোকজনের সমাগম দেখা যায়। পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও তারা রাতে ক্যাম্প থেকে তেমন বের হন না। এছাড়া গ্রামের বিভিন্ন সড়কে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে।  

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ভবানীপুর বাজার সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায়। ওই সব এলাকা থেকে লোকজন এসে ভবানীপুর বাজারে পোস্টারিং করেছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে সর্বহারা সদস্যরা পোস্টারিং করেছে।  

তিনি বলেন, পুলিশের জানামতে দুইটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যারা পোস্টারিং করেছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।