ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে কেজি কেজি মাছ!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে কেজি কেজি মাছ! পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে মাছ ধরছে/ছবি: আসিফ আজিজ

রাজশাহী থেকে: চলেছি নগরীর লক্ষ্মীপুর রোড ধরে। সকালে মাঝারি আকারে বৃষ্টি পড়ছে। সারারাতই ছিলো জোর বৃষ্টি। পানি জমেছে প্রায় সব রোড, আনাচে-কানাচে। শিক্ষাবোর্ড পার হয়েই বাঁয়ে চোখ আটকালো মাছ মাছ ক্যাওয়াচে।

পচা পানির ড্রেনে ছোটবড় সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে ছিপ নিয়ে। তখন কাজের তাড়া।

তাই নামা হয়টি অটো থেকে। সন্ধ্যার আগে ওই স্থানে দেখা গেলো একই চিত্র। তবে ভিড়-ভাট্টা একটু কম।

ছিপ দিয়ে মাঝ ধরার নেশাটা মাথায় ঝলকে মেরে উঠলো। এই শহরে ছিপ দিয়ে মাছ! অটো থেকে নেমে এগিয়ে বসে পড়া কাদেরের পাশে। হুইল ছিপের সুতো আর বড়শি নিয়ে লেগে পড়েছেন মাছ ধরতে। পাশে লাইন ধরে বসা আরও কয়েকজন। তার কাছেই জানা গেলো বিস্তারিত।

পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে কেজি কেজি মাছ ধরার দৃশ্য/ছবি: আসিফ আজিজকাদের গাড়ি চালান। কিন্তু বৃষ্টির সকালে মাছ ধরার নেশা আর সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না। দ্বিতীয় দফায় বিকেল থেকে আবার বসেছেন।

এটা মূলত শহরের সুয়ারেজের ড্রেন। এর সঙ্গে যুক্ত বড় আকারের একটি পুকুর। ময়লা পানি পুকুরে পড়ে ওপাশ থেকে আবার ড্রেন দিয়ে বেরিয়ে যায়। সরকারি পুকুরটি ইজারা দেওয়া। ইজারাদাররা এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন। তবে নাইলোটিকাই বেশি। রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় ছাপিয়ে গেছে পুকুর। প্রাচীরের নিচ দিয়ে মাছ উজসী হয়ে ঢুকেছে ড্রেনে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেজি কেজি মাছ ধরেছেন স্থানীয়রা।

ড্রেনটি সরকারি জায়গায় হওয়ায় মাছ ধরায় কোনো বাধা নেই। কাদের জানালেন, সকালে এতো বেশি মাছ পড়েছে এবং মানুষ এতো বেশি ছিলো যে একজন আরেকজনের ঘাড়ের উপর দিয়ে সুতো ফেলেছে। কাদের সকালে ৮০ টাকা দিয়ে ছিপ কিনে মাছ পেয়েছেন তিন কেজি। বিকেলে আবার বসেছেন তবে মাছ কম। কারণ ইজারাদার প্রাচীরের ভাঙা অংশে নেট লাগিয়ে দিয়েছেন। ফলে মাছ আর আসতে পারছে না। তবু নেশায় পড়ে বসাই বসে।
পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে কেজি কেজি মাছ!পাশে বসা রকিবুল বলেন, মাঝে মধ্যেই ড্রেনে এভাবে মাছ ঢোকে। আমরা ধরি।

তার ব্যাগে বিকেলে পড়া তিনটি নাইলোটিকা আর দুটি রুইয়ের বাচ্চা দেখা গেলো। হুইল ছিপের সুতো, বড়শি দিয়েই ধরছেন সবাই। টোপ হিসেবে ব্যবহার করছেন কেঁচো। নাইলোটিকা নাকি ময়লা পানিতে আবর্জনা খেয়ে টিকে থাকতে পারে।

মাছ ধরা আনন্দের ও নেশার। তাই এই মানুষগুলো ময়লা পানির গন্ধ উপেক্ষা করে সারাদিন ছুটেছে মাছের পিছে। কিছু মাছ জমলে রেখে এসেছেন বাসায়। অনেক দূর থেকে খবর পেয়েও নাকি এসেছেন কেউ কেউ।

ইজারাদারের উপর একটু রাগই হলো! কি দরকার ছিলো নেট দেওয়ার। শহুরে পরিবেশে একটা দিন মাছই তো ধরছিলো সবাই আনন্দে!

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এএ

আরও পড়ুন
** তিতুমীরে হিজড়া-ভিক্ষুকের রাজত্ব!
** পেরেছে কলকাতা-রাজশাহী, পারলো না শুধু ঢাকা!
** ‘নির্বাচিত হলে গ্রামেও আনবো ডিজিটাল সুবিধা’
** এমপি হলে পুরো বেতন অসচ্ছল নেতাকর্মীদের দেব
** ভরসন্ধ্যায় নির্বাচনী উত্তাপ রাজশাহী মহানগর আ'লীগ অফিসে

** এই আমাদের বিমানবন্দর রেলস্টেশন!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।