ইসি’র ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আলোচনার এজেন্ডায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভাবনাসহ সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের দেওয়া সুপারিশগুলোও তোলা হবে। সেখান থেকেই দলগুলো তাদের অবস্থান তুলে ধরবে।
দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের খসড়া কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নয়টি বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ’ ১৯৭২ যুগোপযোগী করা, অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাব কমানো, জনসংখ্যার পাশপাশি ভোটার সংখ্যা, সংসদীয় এলাকার আয়তন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, প্রয়োজনীয় আইন সংস্কার, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন দলের নিবন্ধন, নিবন্ধিত দলের নিরীক্ষা ও ইসি’র সক্ষমতা।
**বিএনপি পরে আ’লীগের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি
এ ৯টি বিষয় ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেওয়া সুপারিশগুলোও দলগুলোর সামনে দেওয়া হবে। তাদের কাছ থেকে আসা সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রয়োজনে সেনা মোতায়েন, না ভোট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মত, পর্যবেক্ষক নিয়োগে সতর্কতা অবলম্বন, ভোটকেন্দ্রে এনআইডি লাগবে না- এটির প্রচারণা নিশ্চিত করা, ভোটে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করা, টিভি চ্যানেল ও সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষক নিয়োগ, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ, ভোটের দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণ, প্রার্থীর হলফনামা এনবিআর-দুদকের মাধ্যমে যাচাই, ভোটার অনুপাতে আসন বণ্টন, স্বাধীনতাবিরোধীদের নিবন্ধন না দেওয়া ও নিবন্ধিতদের কার্যক্রম নিরীক্ষা, ভোটের ফলাফল দ্রুত ও সঠিকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা, সংখ্যালঘু ও পরাজিত প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এছাড়া একাধিক দিনে ভোটের আয়োজন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা এখনই প্রস্তুত রেখে ব্যবস্থা নেওয়া, অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘন ঘন সংলাপ এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণ ও আইন সংস্কারে বড় ধরনের সংশোধন না করার পরামর্শও থাকছে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং গত ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি।
আগামী ২৪ আগস্ট থেকে প্রতিদিন দু’টি করে নিবন্ধিত দলের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে প্রথমেই ডাকা হচ্ছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টকে (বিএনএফ) বেলা ১১টায়, বিকেল ৩টায় বৈঠকে বসবে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট)। এরপর ২৮ আগস্ট বেলা ১১টায় আসছে বাংলাদেশ মুসলীম লীগ (বিএমএল) ও বিকেল ৩টায় খেলাফত মজলিস। আর ৩০ আগস্ট বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বিকেল ৩টায় জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
অন্যদিকে ঈদের পরে ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ও বিকেল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা), ১২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা) ও বিকেল ৩টায় ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) এবং ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ও বিকেল ৩টায় ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের (চেয়ার) সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন।
নিবন্ধিত অবশিষ্ট ২৮ দলের সঙ্গে সংলাপের সময় পরবর্তীতে নির্ধারণ করবে ইসি। এক্ষেত্রে নিবন্ধনের ক্রমানুসারে শেষের দিক থেকেই সংলাপ করা হবে। এতে বিএনপির পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসবে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর