তারচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হলো বইটি বিতরণ করা হচ্ছে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। ‘আপন আলোয় বিশ্ব ভুবন’ নামে বইটির অর্থায়ন করেছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
আদতে এটা যে তার ভাওতাবাজি তা বইটির আদ্যপান্ত পড়লে স্পষ্ট হবে। সরকারি দল ও দলের নেতাদের কাছে সুবিধা নেওয়া যে তার উদ্দেশ্য ছিল তা স্পষ্ট তার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত্নহীন, অবহেলার কাজে।
ইতোমধ্যে বইটির ৪র্থ সংস্করণ বের হয়েছে। এরই মধ্যে খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, যশোর, নড়াইল, ঢাকা, নায়ায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে বইটির শেষের পাতায় মৌলভীবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষিকা প্রকাশক অঞ্জনা ঘোষের বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন হেলাফেলার কাজে প্রকাশক, সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
‘আপন আলোয় বিশ্বভুবন’ বইটি সরকারি লোকজনের নজর কাড়তে আবার উৎসর্গ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এটির প্রকাশকাল আগস্ট-২০১৭। বইটির দ্বিতীয় পাতায় ছবিযুক্ত বাণী হিসেবে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রণধীর কুমার দেব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশশেরুল ইসলামের বক্তব্যসহ তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। যদিও দু’জনই তাদের নাম ও বক্তব্য না জানিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। বইটিতে নেই ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বুক নম্বর (আইএসবিএন) এর স্বীকৃতি কোড। নেই সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন।
বইটির তৃতীয় পাতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো শিরোনামে লেখা প্রায় প্রতিটি পাতায় অসংখ্য ভুল বানান। বঙ্গবন্ধুকে ‘১৯২৯ : বঙ্গবন্ধুক’ নামে উপস্থাপিত হয়েছে। অসংখ্য শব্দ-বানানে ভুল বইটিতে। সঙ্গে রয়েছে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে জিয়াকে টেনে দুই কূল (আওয়ামী লীগ-বিএনপি) রক্ষার চেষ্টা। ১১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘১৯৭১: ২৬ মার্চ: ১২-৩০ মিনিট ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হবার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাবার্তা ওয়ারলেস যোগে চট্টগ্রামের জহুরুল (সঠিক- জহুর) আহমেদ চৌধুরীকে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রাম বেতার থেকে আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী স্বকণ্ঠে প্রচার করেন। ’
এই পর্যন্ত না রেখে তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে আবার জিয়ার প্রসঙ্গ টেনেছেন পরের লাইনে। ‘পরে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে অবস্থিত অষ্টম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান ঐ ঘোষণা পুনঃপাঠ করেন। ’ ‘বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেন’ বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বইটি গত মাসের ২২ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ছয়দিন আগে মৌলভীবাজার শহরের কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল দুই নেতার উপস্থিতিতে সুকৌশলে বই বিতরণ করান বিকুল চক্রবর্তী। সেই দায়িত্বশীল নেতাদ্বয় হলেন- ওই সময়কার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটির সভাপতি নেছার আহমেদ ও মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান।
২৪ অক্টোবর দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার মহাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হয় বিকুল চক্রবর্তীর ‘আপন আলোয় বিশ্ব ভুবন’ শীর্ষক চটি বইটির উপর আলোচনা ও বইটি বিক্রির উদ্যোগ। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সেলিম আহমেদের সভাপতিত্বে ও সহকারী শিক্ষক কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোবাশশেরুল ইসলাম, সাবেক স্বাস্থ্য পরিচালক, সিলেট ডা. হরিপদ রায়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বর্ধন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, মহাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুল হাসান প্রমুখ। পরে বইটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিম্নমান ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্যের বিন্যাসবিভ্রাট বইটি। শিক্ষার্থীরা ২০ টাকা দিয়ে বইটি না নিতে চাইলেও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাপ সৃষ্টি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
বইটির ৫ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৪৬ সালের প্যারায় ‘প্রদেশিক’, ৬ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৪৮ সালের প্যারায় ‘হিশাব’ ও ‘তৎক্ষণিক’, ৯ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৭০ সালের প্যারায় ‘জলোচ্ছাস’ ১০নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৭১ সালের প্যারায় ‘অসযোগ’ ও ‘বঙ্গবন্ধু বলে’, ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৭২ সালের প্যারায় ‘পাশ’ ১৪ নম্বর পৃষ্ঠায় উপর থেকে ৭ম লাইনে ‘আকাক্ষা’, ২৯ নম্বর লাইনে ‘জাতীর’ প্রভৃতি বানান এবং সম্বোধনসূচক ভুল রয়েছে। এছাড়াও সাধু-চলিত মিশ্রণসহ অসংখ্য ভুল বইজুড়ে।
কলামিস্ট ও সাংবাদিক সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, আপন আলোয় বিশ্বভুবন বইটির মধ্যে যে সালগুলো দিয়ে এক-দুই লাইনে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তাতে তথ্যের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। বইজুড়ে ভুলে ভরা খাপছাড়া শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এতো বড় মহান ব্যক্তিত্বকে নিয়ে এভাবে চটি বই প্রকাশ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তাছাড়াও বইটিতে কোনো তথ্যসূত্রও নেই।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশশেরুল ইসলাম বলেন, সেদিন আমি মহাজেরাবাদ এলাকায় পাহাড় কাটার একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আসার পথে স্কুলে ঢুকি। যেহেতু স্কুল পরিদর্শন আমার একটি কাজ। এ কাজের মধ্যে দেখতে পাই স্কুলে বঙ্গবন্ধুর উপর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধান শিক্ষক সাদরে আমন্ত্রণ জানালে সেখানে যাই। দেখি শিক্ষার্থীদের কাছে বিকুল চক্রবর্তীর একটি বই বিতরণ চলছে। শিক্ষার্থীদের সবার হাতে বই। ছবি তোলাও হচ্ছে। বই বিতরণ সর্ম্পকে আমি আগে অবগত ছিলাম না। বইটিতে অনেক ভুল আছে বলে উপস্থিত সবাইকে জানাই।
‘স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। কে তাদের বলেছে, কেন তাদের বই ছাপতে অর্থায়নের অনুমতি দিয়েছে। ভুলে ভরা বইটি নিয়ে প্রেসক্লাবকে প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেবো। এ বই বিতরণে আমরা কোনোভাবেই জড়িত না এবং বইটিতে আমার যে বাণী রয়েছে সেটিও আমার না। স্বাক্ষরও নেই। আমার ছবি ফেসবুক থেকে নিয়ে ছেপে দিয়েছে। ’
বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান ইউএনও। তিনি বলেন, আমি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি যে বইগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে সেগুলো সিজ করে উপজেলায় নিয়ে আসতে।
ইউএনও আরো বলেন, উপজেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে টাকার বিনিময়ে বইগুলো বিতরণের জন্য বিকুল চক্রবর্তী আমার কাছে একটি লিখিত অনুমতি চেয়েছিল। আমি সরাসরি না করে দিয়েছি।
বইটিতে অনুমতি ছাড়া তার বাণী ও ছবি প্রকাশিত হলে এর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাশশেরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেইনি কারণ, এটি তো আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। আমি ঢাকায় একটি ট্রেনিংয়ে আছি। ঢাকা থেকে আসলে এ ব্যাপারে একটি প্রতিবাদ দেবো।
সরকারি কারিকুলামের পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্ভুল ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস অর্ন্তভুক্ত থাকার পরও কেন ভুলে ভরা বানান ও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে তথ্যবিকৃতির বইটি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে-এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বর্ধন বাংলানিউজকে বলেন, ইউএনও স্যারের সঙ্গে হঠাৎ মহাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি তারা বই বিতরণ করছে। এ বই সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। সত্যি কথা যেটা, বইটি আমি এখনো পড়িনি।
তিনি আরও বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষই কেন বইটির জন্য অর্থায়ন করলো, তা আমি দেখছি।
শিক্ষার্থীদের কাছে বিতরণ করা বইগুলো কি হবে- প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি হেডমাস্টারকে নির্দেশনা দেবো বিতরণ করা সব বই উঠিয়ে নিয়ে আসার জন্য।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রণধীর কুমার দেবের কাছে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় বিকুল চক্রবর্তীর সম্পাদিত আপন আলোয় বিশ্বভুবন বইটিতে ছাপা হওয়া আপনার ছবিসহ ওই বাণীটি দিয়েছেন কি না? তাতেই তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বইয়ে আমি বাণী দেইনি। বাণীতে আমার সই নেই। বইটি আমি দেখিওনি। সে আমাকে বলেছিল মহাজিরাবাদ স্কুলে বই বিতরণে যেতে। আমি বলেছি, আমার সময় নেই। যেতে পারবো না।
এ প্রসঙ্গে জানতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ মান্নান বলেন, ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসার সরকারি কর্মকর্তা। কোন কাণ্ডজ্ঞানে এই বিতর্কিত বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণে উপস্থিত হলেন ওনাদের সঙ্গে কথা বললেই জানতে পারবো। যে কেউ তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বই লিখতে পারেন, কিন্তু এই বই শিক্ষার্থীদের কাছে কার অনুমোদনে বিলি করা হলো- এটা আমারও প্রশ্ন। বিষয়টি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসককে জানাবো।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে দেওয়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কে এই ছেলেটা? কত নম্বর সংস্করণ বের করেছে সে? বিষয়টি ইউএনওকে বলতে হবে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে। ওর বিরুদ্ধে মামলা করে ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিতে।
এসময় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানাতে বলেন এবং নিজেও কথা বলবেন বলে জানান।
স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের সাবেক চিপ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি শুক্রবার শ্রীমঙ্গল আসছি। ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ডাকবো। শিক্ষার্থীদের কাছে বই বিতরণের বিষয়টি জানতে চাইবো। বইটি আমি এখনো দেখিনি।
কে বিকুল চক্রবর্তী?
বিকুল চক্রবর্তী সম্পাদিত আপন আলোয় বিশ্বভুবন এ বইয়ের শেষ পাতায় একটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে- তিনি দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার, একুশে টেলিভিশন, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম, দ্য ডেইলি ইন্ডাস্ট্রি, চ্যানেল এস এর মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি দৈনিক শ্যামল সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক মৌলভীবাজারের বার্তাসম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
আগে চ্যানেল আই এর নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় প্রতিনিধি পদ থেকে চাকুরিচ্যুত হন তিনি। সম্প্রতি তিনি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব’ থেকেও বহিষ্কৃত হয়েছেন।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে ‘নিউজ কর্নার’ নামে আরো একটি সিন্ডিকেট কেন্দ্র চালু ছিল। মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন পেরুতে না পারাদের সংবাদকর্মী বানিয়ে গড়া তোলা এ নিউজ কর্নারে তোফায়েল নামের এক সাংবাদিক ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়লে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে ১৮৮ পিস ইয়াবাসহ র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার মাঈন উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে তাকে ও তার অপর এক সহযোগী কালামকে গ্রেফতার করেন। আর ডান পাশে চশমা পরা আকাশি রঙের শার্ট পরিহিত বিকুল চক্রবর্তীর সঙ্গে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক তোফায়েলকে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে বিকুল চক্রবর্তী ‘নিউজ কর্নার’ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
অর্থের যোগান:
তথাকথিত সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্তীর রয়েছে বহু অর্থের যোগানদাতা। হাইল-হাওরখেকো গোলাম মোস্তফা রাজা মিয়াকে ‘পাখিপ্রেমী মাস্টার’ হিসেবে স্বীকৃতি কিংবা বৃক্ষ ও পরিবেশ ধ্বংসকারী শ্রীমঙ্গলের কিবরিয়া মহালদার ‘সমাজসেবক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থসহ নানা সুযোগ-সুবিধা আদায় করেন। শুধু এ দু’জনই নয়, তার অর্থের যোগানদাতার তালিকায় রয়েছে বহু নাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
বিবিবি/এএ