তিনি বলেছেন, পার্কটি বহু মানুষের কর্মসংস্থান করবে। আগামীতে প্রতিটি জেলায় একটি করে হাইটেক পার্ক নির্মাণ করবে সরকার।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্কটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় পার্ক মিলনায়তনে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান যশোরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
পার্ক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের ৪৬ বছরের মধ্যে প্রায় ২৯ বছর হেলায় হারিয়ে গেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতা দখল করেছেন, তারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখেননি তারা, এমনকি বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যহত রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, মানুষ তখন কম্পিউটার ব্যবহার করতেন না। কেউ কেউ শখ করে কম্পিউটার কিনলেও শো’পিচের মতো সাজিয়ে রাখতেন আর ব্যবহার করতেন টাইপ মেশিন। এর আগে ক্ষমতায় থাকা বিএনপি সরকার প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে খেয়াল করেনি, দেশের তথ্যপাচারের অজুহাতে সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ পর্যন্ত নেয়নি। শুধুমাত্র হাওয়া ভবন খুলে অনিয়ম-দুর্নীতি করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজে ছেলে জয়ের কাছ থেকে কম্পিউটার শিখেছি। মানুষের মাঝে প্রযুক্তি সহজলভ্য করতে জয়ের পরামর্শে কম্পিউটার ও পার্টসের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। কয়েকজনকে বলে তিনটি পুরনো কম্পিউটার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতরণ করে এর ব্যবহার করাই। পরে বিনিয়োগ বোর্ডের সভায় কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করি।
‘তবে দুর্ভাগ্য যে, ২০০০ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বন্ধ হয়ে যায়। ভাগ্য ভালো, বিএনপি হাইটেক পার্ক প্রকল্প বন্ধ করলেও জমিটা দখল করেনি’।
ডিজিটাল শব্দটি জয়ের কাছ থেকে নেওয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজে বুড়ো হয়েছি, এসব শব্দ জানবো কিভাবে? তবে সে সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার জানালে ঠাট্টা-তামাশা করতো প্রতিপক্ষ বিএনপি। এমনকি বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা সামান্য স্বাভাবিক কিছু ঘটলেও বলে উঠতো- ওই ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন তৃণমূল পর্যায়েও প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে, আর কেউ ঠাট্টা-তামাশা করে না’।
যশোর পার্ক মিলনায়তনে উপস্থিত ছিলেন যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন কুমার ভট্টাচার্য, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহম্মেদ, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ার হোসেন, যশোরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনসহ আইটি কোম্পানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-ছাত্রসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
ইউজি/এএসআর
** চালু হলো ‘শেখ হাসিনা টেকনোলজি পার্ক’