শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ৩৯ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ বা পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন ছায়েদুল হক।
বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও গণসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শাহ আলম বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
শাহ আলম বলেন, মন্ত্রী আগস্ট মাস থেকে প্রোস্টেট গ্লান্ডের সংক্রমণে ভুগছিলেন। ১৩ ডিসেম্বর থেকে তাকে পিজি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (আইসিইউ) ১৬ নম্বর বেডে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
মৃত্যুকালে ছায়েদুল হক স্ত্রী ও একমাত্র পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার একমাত্র পুত্র ডাক্তার এ এস এম রায়হানুল হক ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
সকাল ১০টার দিকে পিজি হাসপাতালে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডা. এ এস এম রায়হানুল হক জানান, মন্ত্রীর মরদেহ আপাতত হাসপাতালের হিমঘরেই রাখা হবে। এখান থেকে রোববার সকাল ৮টায় মরহুমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় সংসদে। সকাল সাড়ে ৯টায় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় হবে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা। এসময় সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদ সদস্য এবং দলের নেতারা ছায়েদুল হককে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।
সেখান থেকে মরহুমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা ও জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। সেখানে মরহুমের এলাকায় বেলা ১১টায় হবে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। এরপর ছায়েদুল হককে তার পারিবারিক কবরস্থানে চিরশায়িত করা হবে।
১৯৪২ সালের ৪ মার্চ জন্ম নেওয়া ছায়েদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে মোট পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি। তিনি ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা এর আগে খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।
ছায়েদুল হক ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ১৯৬৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয় ছিলেন এবং ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো নাসিরনগর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে ছায়েদুল হক এ খাতে ব্যাপক উন্নয়নসাধন করেন। তার সময়েই মৎস্য ও ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে চতুর্থ স্থান অর্জন করে। তার প্রচেষ্টায় ইলিশ উৎপাদনেও ঈর্ষণীয় সাফল্যে আসে। মন্ত্রীর উদ্যোগের ফলেই ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দেশের জনগণ অভাবনীয় স্বল্পমূল্যে ইলিশ খেতে সক্ষম হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নাসিরনগরের ব্যাপক উন্নয়নে স্মরণীয় অবদান রেখেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এমআইএইচ/এমএইচ/এজেডএস/এইচএ/
ছায়েদুল হকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক
ছায়েদুল হকের জানাজা-দাফন রোববার সকালে
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, এতেই তৃপ্ত ছিলেন বাবা
ছায়েদুল হকের মৃত্যুতে স্পিকার-ডেপুটি স্পিকারের শোক