ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুয়াশা-কনকনে শীতে কাহিল উত্তরের মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৮
কুয়াশা-কনকনে শীতে কাহিল উত্তরের মানুষ দিনাজপুরে ঘন কুয়াশা আর চারিদিকে বইছে হিমেল হাওয়া। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: গত দু'দিনে আকাশ থেকে নামছে ঘন কুয়াশা আর চারিদিকে বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে উত্তরের জেলা দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত।

দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টাই আকাশ থাকে মেঘাচ্ছন্ন। একই সঙ্গে নামছে তুষারের মতো কুয়াশা।

সন্ধ্যা থেকে পরদিন আধাবেলা পর্যন্ত থাকছে প্রচণ্ড শীতের দাপট।  সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ঝড়ছে টিপ টিপ করে। যেন মনে হয় ঝরছে বৃষ্টি। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।

ট্রেন চলাচল করছে ধীরগতিতে। প্রচণ্ড শীতের কারণে সন্ধ্যার পর সাধারণ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বেরোচ্ছেনা। শীতবস্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা কাহিল। দিনের বেলায় যানবাহনগুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।  ছবি: বাংলানিউজঅপরদিকে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষেরা ভিড় করছে জেলার হকার্স মার্কেটগুলোতে।  কাজে যেতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।  

এদিকে, আবহাওয়া কার্যালয় বলছে শীতের তীব্রতা আরো বাড়বে যা আগামী তিন থেকে চারদিন অব্যাহত থাকবে।

তবে ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা ও কনকনে শীতে দিনমজুর ও সাধারণ মানুষেরা ঘর থেকে বেরোতে পারছেনা। আর সন্ধ্যার পর থেকে ছিন্নমূল অসহায় মানুষেরা ফুটপাতে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে নিবারণ করছে শীত।

এ পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে না হলেও স্থানীয়রা ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরিব অসহায় মানুষদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করছে। ছিন্নমূল অসহায় মানুষেরা ফুটপাতে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে নিবারণ করছে শীত।  ছবি: বাংলানিউজদিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন চত্বরের ছিন্নমূল মানুষের একজন আফজাল হোসেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‌'যেভাবে শীতের তীব্রতা বাড়ছে আমাদের মতো ফুটপাতের মানুষের বাঁচাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ধ্যার পর খড়-কুটা কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে রাতটা কোনোমতে কাটাই। যে ক'দিন শীতের দাপট থাকবে আমার মতো মানুষদের চোখে ঘুম থাকেনা। আগুনের পাশেই জেগে রাত কাটাতে হয়। এই শীতে যেখানে বস্ত্র কাজে লাগেনা সেখানে বস্ত্র ছাড়া কেমনে থাকি। শীতের কাপড় দিয়ে সাহায্য করলে আমরা বাঁচতে পারবো। '

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা এলাকার কৃষক মো. মনির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, প্রচন্ড শীতের কারণে হুমকির মধ্যে পড়েছে বোরো চাষের বীজতলা। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে শিম, বেগুন, আলুসহ সবজি ক্ষেতে। শীত ও কুয়াশার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। এজন্য গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচা।

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শীতের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাবে। যা আগামী ৩-৪ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৩ শতাংশ যার গতিবেগ ছিলো প্রতি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার।

এছাড়াও রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে হাড় কাঁপানো শীতে ছিন্নমূল মানুষগুলো জবুথবু হয়ে পড়েছে।

ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে গোটা রাজশাহী। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এর উপর উত্তরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, ০৪ জানুয়ারি, ২০১৭
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।