বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী ও আওয়ামী লীগ দলীয় সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর পৃথক দুই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শীর্ষ ১ হাজার ৯৫৬ জন ঋণ খেলাপির তালিকাও দেন।
অর্থমন্ত্রী সংসদে ঋণদাতাদের পাশাপাশি ১ হাজার ৯৫৬ শীর্ষ ঋণ খেলাপির নাম সম্বলিত তালিকা উপস্থাপন করেছেন।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মিলন তার প্রশ্নে অভিযোগ করেন, গত ৩ বছর ধরে আমরা বেসিক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের বহু দুর্নীতির কথা শুনেছি। ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালকরা সাইনবোর্ড সর্বস্ব অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে সেই অর্থ নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ব্যাংকটি খেলাপিঋণ গ্রহিতাকে বার বার ঋণ দেওয়ার নজিরও স্থাপন করেছে। একইভাবে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেও সীমাহীন অনিয়ম হচ্ছে। অনুপস্থিত পরিচালকদের স্বাক্ষর জাল করে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যানের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এবি (আরব-বাংলাদেশ) ব্যাংকের যোগসাজশে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার হয়েছে। প্রায় হাজার বাংলাদেশি মালয়শিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশিরা সুইস ব্যাংকে খুলেছে নতুন ৫০০ অ্যাকাউন্ট। এ ব্যাপারে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জানানোর দাবি জানান তিনি।
একই দলের সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ফেনীর সংসদ সদস্য বেগম শিরীন আখতারও ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও অব্যস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
জবাবে অর্থমন্ত্রী সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলো সংসদের সামনে তুলে ধরেন। ব্যাংকিংখাতের অনিয়ম উত্তরণ সময়সাপেক্ষ
তিনি বলেন, বেসিক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকে সংগঠিত দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফারমার্স ব্যাংকে সংঘটিত দুর্নীতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে একজন পর্যবেক্ষকও নিয়োগ দিয়েছে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এক পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। আর্থিক অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) অপসারণ করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি ফারমার্স ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সভায় ব্যাংকের খেলাপিঋণ ও নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ঋণ পুনরুদ্ধারে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়ে আমানতকারীদেরও আস্থা অর্জনে তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডিকেও অপসারণের পাশাপাশি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এসএম/এসকে/জেডএস