বুধবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বারিধারায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির জিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মো. কামরুল ইসলামে সাংবাদিকদের বলেন, ডিএনএ টেস্টের মতো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেপাল সরকার মরদেহ হস্তান্তর করতে চাইছে। আমরা আমাদের প্রশাসনকে যেভাবে পাচ্ছি, নেপাল প্রশাসনকে সেভাবে পাচ্ছি না।
‘এটাকে আমরা দুর্যোগ হিসেবে দেখছি। আপনারা জানেন নেপালের ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশই প্রথম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ দুর্যোগকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার সিঙ্গাপুর সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে এর একটা সহজ সুরাহা হবে বলে আশা করছি। এরইমধ্যে আমাদের দেশের বিমান পরিবহনমন্ত্রী নেপাল রয়েছেন। তার মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ’
কামরুল ইসলাম বলেন, মরদেহ আনতে কত সময় লাগবে, তা নির্ভর করছে নেপাল সরকারের ওপর। তাই দু’দেশের সরকারি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, মোস্ট অব দ্য ডেড বডিস বার্ন (বেশিরভাগ মরদেহই পুড়ে গেছে)। সেজন্য কেউ কাছে যেতে পারছে না। তবে কতটুকু বার্ন তা শিওর করে বলা মুশকিল। ইউএস-বাংলার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। মরদেহ আনার জন্য আমরা প্রস্তুত। কখন ডেড বডি দেওয়া হবে সেটার ওপর নির্ভর করছে।
ইউএস-বাংলার জিএম বলেন, ডিএনএ টেস্ট করতে পরিবারের সদস্যদের যেতে হবে। যারা পাসপোর্ট না থাকার কারণে যেতে পারেননি, একটু সহযোগিতা করুন। আমরাই পাসপোর্ট করার ব্যয়ভার বহন করবো। আমাদের এয়ারক্রাফট প্রস্তুত আছে। মরদেহ হস্তান্তর করলে দ্রুত নিয়ে আসবো।
‘এছাড়া আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পৃথিবীর যে কোনো দেশে নিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত। এরইমধ্যে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা কথা বলছি। যদি নেপাল থেকে সরাসরি নিয়ে যেতে হয়, তাও নিয়ে যাওয়া হবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। ’
তিনি বলেন, স্বজনরা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু বিষয়টি আর আমাদের হাতে নেই। দু’দেশের সরকারসহ বিভিন্ন অথরিটি কাজ করছে। আমরা লিয়াজোঁ করছি। মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ডিএনএ টেস্টের প্রক্রিয়ায় যাওয়ায় বিভিন্ন ফরম পূরণসহ অন্যান্য কারণে দেরি হচ্ছে।
কামরুল ইসলাম বলেন, পাইলটের গাফেলতি ছিল বা তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন বলে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। একজন পাইলট ১৪ ঘণ্টা ডিউটি আওয়ারের মধ্যে ১১ ঘণ্টা ফ্লাই করতে পারেন, এটাই রুলসে আছে। তিনি ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ফ্লাই করার আগে ৪৫ মিনিটের ছোট ছোট ফ্লাই করেছেন। তার ফ্লাই করার আরও ঘণ্টা ছিল। তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন না।
ককপিটের সিভিআর এবং ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে সবকিছু সংরক্ষিত আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্ল্যাক বক্সের তথ্য এলেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
কামরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার কারণে অপপ্রচার চালানো হতে পারে। আমাদের কথা হচ্ছে, প্রতিবছর দেশের বাইরের এয়ারলাইন্সগুলো অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় এয়ারলাইন্সকে আপনারা রক্ষা করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
ইউডি/এসএইচ