রোববার (১ এপ্রিল) বিকেলে তানভীরের মরদেহ জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডা এলাকার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাদ মাগরিব নিহতের জানাজা শেষে মেড্ডার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বাবা মো. ফসিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তানভির প্রায় সময়ই তার মায়ের কাছে বলত আমার বাবা কিসের মুক্তিযোদ্ধা। আমি বিভিন্ন সরকারি চাকরি দেওয়ার পর আমার চাকরি হয় না। এ থেকে তার মনে একটা ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে। তার কথাগুলো তার মায়ের কাছ থেকে শোনার পর আমি তাকে ঢাকার উত্তরায় একটি বায়িং হাউজে চাকরির ব্যবস্থা করে দেই। তিনদিন কাজ করার পর হঠাৎ তার মাকে ফোন করে বলে আমাকে তোমরা মাফ করে দিও। শনিবার রাতে হঠাৎ করে সে তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যম্পাসের এমবিএ ভবনের নয়তলা উপর থেকে আত্মহত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, মারা যাওয়ার দেড় মাস আগে একবার তানভির বাড়িতে এসেছিল। কয়েকদিন বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় তার মায়ের পায়ে ধরে সালাম করেছিল। বলেছিল মা তোমাকে সালাম করে যাই। আর কোন দিন দেখা না হতে পারে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চার ভাই বোনের মধ্যে তানভির দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তার ছোট দুই বোন একজন নাদিয়া তাইসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আরেকজন সুমাইয়া তাইনা জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছে। তানভির ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় এক খালার বাসায় বড় হয়েছেন। ২০০৫ সালে তিনি বিএএফ শাহিন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করেন। এরপর ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে সান্ধ্যকালীন এমবিএ কোর্সে ভর্তি হন। তিনবছর যাবত সরকারি চাকরি জন্য খুব চেষ্টা করছিল সে। বিভিন্ন সময়ে চাকরির জন্য ইন্টারভিউও দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও সে চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিল। চাকরি না পাওয়ায় হতাশা থেকেই তানভির আত্মহত্যা করেতে পারে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরি না পাওয়ায় হতাশ হয়ে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এমবিএ ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তানভির।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৮
এনটি