সম্প্রতি নিউইয়র্কের এক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সেখানকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক জাহিদ তানভীর অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এখনও মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়ে গেছেন।
তিনি জানান, সহজে লাইট তৈরির ধারণাকে প্রচার করে লিটার অব লাইট। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির স্বেচ্ছাসেবকরা অনুদানের অর্থ দিয়ে নিজেরা সোলার প্যানেল, ব্যাটারি, পিভিসি পাইপ এবং বোতল দিয়ে স্ট্রিট লাইট এবং ল্যাম্প তৈরি করেন। তারপর বিদ্যুৎবঞ্চিত গ্রাম, পার্বত্য অঞ্চল, উপকূলীয় অঞ্চল অথবা বস্তিতে গিয়ে লাইটগুলো স্থাপন আর বিতরণ করা হয়। শেষে এলাকার মানুষদেরকে শেখানো হয় কিভাবে লাইটগুলো নিজেরাই সহজে তৈরি করতে পারবেন, যাতে নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেরাই করতে পারেন।
লিটার অব লাইট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক সানজিদুল আলম সিবান শান স্কাইপের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা দান করেই দায়বদ্ধতা এড়িয়ে চলি, তা না করে যদি সুবিধাবঞ্চিতদের স্বাবলম্বী করে দিতে পারি, তাদের সমস্যা সমাধানের পথ তাদের দেখিয়ে দিতে পারি, তবে সমাধান খুব সহজেই সম্ভব। এনজিওগুলো বিদ্যুৎবঞ্চিতদের সাহায্যার্থে তৃণমূল পর্যায়ে সোলার সিস্টেম দিলেও অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষে তা ব্যবহার সম্ভব হয় না। আমরা যদি খুব অল্প মূল্যে তৈরি করা যায় এমন সোলার লাইট বানানো শিখিয়ে দিতে পারি তাদের, তারা নিজেদের ঘর নিজেরাই আলোকিত করতে পারবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আমরা কাজে লাগাতে পারবো, সামাজিক একটা সমস্যা সমাধানে। উদ্ভাবনের এই যুগে সমস্যা সমাধানে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প লাগে না, উদ্ভাবনী আইডিয়ার প্রয়োগিক ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব। ’
অনুষ্ঠানের বক্তারা এই প্রকল্পে বিনামূল্যে লাইট প্রদানের লক্ষ্যে আর্থিক সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানান।
লিটার অব লাইট সারাবিশ্বে ২০টিরও বেশি দেশে কাজ করছে একশ’র বেশি বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে। উদ্ভাবনী এই আইডিয়া ছড়িয়ে দিতে যেমন স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন, তেমনি সহায়তা নেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরও। লিটার অব লাইট বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী প্রকৌশলী টিম এরইমধ্যে সহজলভ্য কাঁচামাল দিয়ে তৈরিযোগ্য পাঁচ ধরনের বাতি তৈরি করেছে, যা যে কেউ একবার দেখিয়ে দিলে নিজেরাই তৈরি করতে পারবে। প্রকল্পের ট্রেইনিং, বাতি তৈরি, গবেষণাসহ সার্বিক পরিচালনার জন্য তারা অনুদান নিয়ে থাকেন।
লিটার অব লাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে তাদের ফেসবুক পেজ www.facebook.com/literoflightbd-এ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এইচএ/