ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট’

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট’ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট’। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: রোগব্যাধির প্রকোপ কমাতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে ‘পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট’। প্রায় দেড় লাখ মানুষের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ প্ল্যান্টটি হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিত বিশ্বের সবচেয়ে বড়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিপুল পরিমাণ পয়ঃবর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে একটি নিদিষ্ট স্থানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিশোধনের মধ্য দিয়ে রোগব্যাধির প্রকোপ কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এ প্ল্যান্টটিকে একটি নিরাপদ ও বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় এ প্ল্যান্টটি তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফ্যাম। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে উখিয়ার কুতুপালংয়ের ক্যাম্প-৪ (এক্সটেনশন) আড়াই একর পাহাড়ি জমিতে স্থাপিত এ প্ল্যান্টটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ এনামুর রহমান। ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট’র উদ্বোধন করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ এনামুর রহমান।  ছবি: বাংলানিউজঅনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম। অনুষ্ঠানে আরো ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ প্রধান স্টিভেন কর্লিস ও ক্যাম্প ইনচার্জরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ এনামুর রহমান বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এটি একটি চমৎকার প্রকল্প। ক্যাম্পে রোগব্যাধির প্রকোপ কমাতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এটি করা হয়েছে। যা পরিবেশের জন্য কোনো ক্ষতি করবে না। আমাদের বড় বড় মেট্রোপলিটন, সিটিতেও কিন্তু এই ব্যবস্থা নেই। এখানকার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও অসাধারণ। এটি সফল হলে আমাদের দেশের বিভিন্ন বস্তিতে এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়ও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অক্সফ্যামের ওয়াটার ও স্যানিটেশন প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিকটি মাথায় রেখেই মূলত এটি করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, তাও আবার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ পরিবেশবান্ধব প্ল্যান্টটি রোহিঙ্গাদের সুস্থ রাখবে। প্রতিদিন গড়ে ৪০ কিউবিক মিটার বর্জ্য এখানে ব্যবস্থাপনা করা যাবে।

ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি স্টিভ করলিস এই প্ল্যান্ট সম্পর্কে বলেন, এই প্ল্যান্ট স্থাপনের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্যাম্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্থায়িত্ব বজায় রেখে রোগ সংক্রমন কমিয়ে আনা।

অক্সফ্যামের কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপংকর দত্ত বাংলানিউজকে জানান, সিরিয়া, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গারা বাস করছে। বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্টগুলো আছে, এরমধ্যে এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ভবিষ্যাতে এ প্রকল্প থেকে বায়ু গ্যাস উৎপাদনের বিষয়টিও পরীক্ষামূলকভাবে আমরা দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।