ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের ক্যাপিটাল ফ্লাই হচ্ছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
‘অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের ক্যাপিটাল ফ্লাই হচ্ছে’ ইউএস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘অর্থপাচার বা মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে শুধু সন্ত্রাসেরই অর্থায়ন হয় না,  বরং দেশের ক্যাপিটাল ফ্লাইয়িংও হচ্ছে। যা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’ 

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্টেট অব কোর্টস (স্ট্রেংথেনিং অব ল’ প্রোগ্রাম) এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)  চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন।  

দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রবার্ট লকারি।

 

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যমান আইন অনুসারে মানিলন্ডারিং মামলা পরিচালনার একক দায়িত্ব দুদকের নেই। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ একাধিক সংস্থা মানিলন্ডারিং মামলা পরিচালনা করছে। দুদক কেবল ঘুষ ও দুর্নীতিসম্পৃক্ত মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত।  

‘বাকি ২৬টি সম্পৃক্ত অপরাধ ও সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত অন্যান্য সংস্থাসমূহের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের মঞ্জুরী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে মানিলন্ডারিং বা অর্থপাচারে দুদকের মামলায় সাজার হার শতভাগ। ’ 

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুদক চেয়ারম্যানকে জানান, তদন্ত ও প্রসিকিউশন বিচারের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। তদন্তকারীরা যেসব সাক্ষ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করবেন, তার সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনা করে বিশ্লেষণ করবেন প্রসিকিউটররা। অর্থাৎ তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং বিচারক অপরাধ দমনে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। আর অপরাধ দমনে কার্যকর তদন্ত  ও প্রসিকিউশনের প্রয়োজন।

এ সময় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, কমিশনের তদন্ত ও প্রসিকিউশনের সক্ষমতা হয়তো এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। তবে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তদন্তকারী  কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটরদের সক্ষমতা আরো বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

‘দুদকের স্থায়ী প্রসিকিউটর নেই’ জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, শুধু দুদক নয়, সরকারেরও কোনো স্থায়ী প্রসিকিউটর নেই। তারপরও দুদক প্রসিকিউটরদের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের  জন্য কমিশন অনুমোদিত নীতিমালার আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটের এবং সংশ্লিষ্ট বিচারকদের প্রশিক্ষণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য প্রতিনিধি দলের প্রতি আহ্বান জানান।  

তিনি বলেন, শুধু আমেরিকায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে তা নয়, বরং আপনারা আপনাদের এসব ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের বাংলাদেশে এনে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারেন।  

‘কমিশনের কোনো আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রয়োজন জ্ঞানের। যার মাধ্যমে আমরা পদ্ধতিগত উন্নয়ন ঘটাতে পারি। আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশি-বিদেশি জ্ঞানের মিশ্রন। ’ 

তিনি বলেন, ছোট ছোট কিছু দুর্নীতি রয়েছে, যা অঙ্কুরেই বিনাশ করা গেলে বড় বড় দুর্নীতির পথ সঙ্কুচিত হয়ে আসে। তা না হলে এই ছোট ছোট দুর্নীতি একসময় দুর্নীতির মহিরুহে পরিণত হয়, যা সমাজকে বিপন্ন করে ফেলে এবং তা উপরে ফেলাও দুরুহ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
আরএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।