ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের মুরুব্বি কিংবা নেতৃত্বদাতাদের ব্যর্থতাকে বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ইজতেমার নিরাপত্তার বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
এসময় বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা আশা করবো ইজতেমার দায়িত্বশীলরা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতকভাবে রাষ্ট্র কিংবা ইসলামের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। তাবলীগ জামাতের নেতা এবং মুরুব্বিদের ব্যর্থতাকে আমরা বরদাশত করবো না। কোনো দায়িত্বশীলের ভুলে, কোনো ব্যক্তি বা কোন গ্রুপের ভুলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, যেভাবে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, সেভাবেই সবাই নিয়ম পালন করবেন এবং বয়ান হবে, আখেরি মোনাজাত হবে। প্রথম গ্রুপ ইজতেমা শেষে শান্তিপূর্ণভাবে প্রস্থান করবে, পরে আরেক গ্রুপ আসবে।
ইজতেমা নিয়ে গত এক বছরে বিভিন্ন মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। তাই এই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের ইজতেমায় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বেশি। প্রতিবছর ইজতেমা ঘিরে যে ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে, এর সঙ্গে এবার বাড়তি কিছু যুক্ত হয়েছে- উল্লেখ করেন ডিজি।
শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব বিষয় মাথায় রেখে এবার সকল আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, তাবলীগ জামাতের মুরুব্বিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা যেহেতু আল্লাহর এবাদত করেন, তাই তারা ইজতেমার শান্তিশৃঙ্খলা এবং পরিবেশ বজায় রাখবেন। তাবলীগ জামাতের মুরুব্বিদের প্রতি আশা রাখবো, তারা যেনো এখানে কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি না করেন।
র্যাব প্রধান আরও বলেন, অন্য সব বারের তুলনায় এবার সিসিটিভি কাভারেজ বেশি থাকবে। বিদেশি মেহমানসহ আসা সকল মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাবো। বিদেশিদের নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের ইমেজ জড়িত। তাই আমরা লক্ষ্য রাখবো এমন কোনো ঘটনা যেনো না ঘটে। যা বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না। আপনাদের আশপাশে আমরা সাদা পোশাকে যেমন থাকবো, পোশাকেও থাকবো। আপনাদের আইনি সহায়তা প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যাবেন, আমরা দ্রুত আপনাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
‘তাবলীগ জামাতের মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ থাকবে, যাতে করে কোনো ধরনের গুজব সৃষ্টি হলে আমরা এটা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারি। তাবলীগ জামাতের নেতাদের বলবো, কোথাও কোনো তথ্য পেলে, সেটি যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। আর যাচাই না করতে পারলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন, আমরা করবো। কিন্তু আনভেরিফাইড কোনো তথ্য এই বিশাল মহাসমাবেশে ছড়িয়ে দেবেন না। ’
তিনি আরও বলেন, ইজতেমা ঘিরে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, এ মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে আমাদের প্রস্তুতি পর্যাপ্ত। কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই।
আমাদের এবার যে পরিমাণ পোশাকধারী লোক থাকবে, তার চেয়ে বেশি লোক থাকবে সাদা পোশাকে। প্রত্যেকটা খিত্তাকে ঘিরে আমরা সাদা পোশাকের আবরণ সৃষ্টি করবো।
ইজতেমার ময়দানে ক্যাপাসিটি অনুযায়ী র্যাবের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের হেলিকপ্টার টহল থাকবে, মাঠে ড্রোন থাকবে। ইলেকট্রিক ইকুইপমেন্ট দিয়ে ময়দান সুইপিং করা হবে এবং ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের সুযোগে কোনো তৃতীয় পক্ষ যেনো সুযোগ নিতে পারে, সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সতর্ক থাকবো। তারপরও কেউ যদি এ ধরনের অপচেষ্টা করতে চেষ্টা করে, তাহলে আমরা তাদের সমূলে বিনষ্ট করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
পিএম/টিএ