বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রভাত ফেরিতে সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের দেওয়া ফুলে ইতোমধ্যে ভরে গেছে শহীদ মিনারের বেদি।
শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আগত সবাই বহন করছেন ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি স্মৃতিচিহ্ন। তাদের মধ্যে অনেকের ব্যানারে লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি...’। একুশ আমাদের পথ চলা, একুশ আমার অহংকার।
প্রভাত ফেরিতে একে একে শ্রদ্ধা জানাতে আসে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক), বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, রাজউক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সমিতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
এছাড়া শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় সুফিয়া কামাল হল, রোকেয়া হল, ইডেন কলেজ ও হোম ইকোনোমিক্স কলেজ ছাত্রলীগ।
এরআগে ভোর পৌনে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এসময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ঢাবি শিক্ষক সমিতির পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রভাত ফেরিতে শ্রদ্ধা জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ এনজিও ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)।
এরআগে একশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতির পক্ষে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি...’ বাজানো হয়।
বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
রাত ১২টা কয়েক মিনিট আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ মিনারে পৌঁছালে কয়েকজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ বিশিষ্ট জনেরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এরপর ১২টার কিছু আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
স্পিকারের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবেও শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
এরপর জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পক্ষে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদের, ভাষা সৈনিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
ইএআর/ওএইচ/