সোমবার (০৪ মার্চ) দুপুরে কাদেরের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিএসএমএমইউ'র কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান বলেন, সকাল ৯টা থেকে রক্তচাপ ১১০ থেকে ১৭০ বিপিএম এর মধ্যে ছিল।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আমাদের এখানে চিকিৎসা ভালো হচ্ছে তা দেবী শেঠীও বলেছেন। তবে সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে দেবী শেঠীকে নিয়ে আসার একটি নির্দেশনা ছিল। যে কারণে তিনি এসেছেন। তিনি নিজেই একটি নিজস্ব প্লেনে করে চলে আসেন। তিনি পৌনে একটার দিকে বাংলাদেশে অবতরণ করেন। এরপর হাসপাতালে এসে তিনি সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছেন।
তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে চিকিৎসা পেয়েছেন তা ইউরোপ, আমেরিকাতে এর চেয়ে বেশি হতো না।
এসময় সেতুমন্ত্রীর স্ত্রী ইশরাতুন্নেসা কাদেরকে উদ্দেশ্য করে দেবী শেঠী বলেছেন, আপনি খুবই ভাগ্যবান (ইউ আর ভেরি লাকি)। তার সব চিকিৎসাই এখানে দেওয়া হয়েছে। এখন আপনারা যে কোনো সময় তাকে দেশের বাইরে নিতে পারেন।
কনক কান্তি বড়ুয়া আরও বলেন, কাদের সাহেবের সবকিছু পর্যবেক্ষণের পর দেবী শেঠী বলেছেন, তার যা চিকিৎসা প্রয়োজন তার সবটা করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি চিকিৎসা ইউরোপ-আমেরিকাতে হয় না। এখন চাইলে আপনারা তাকে শিফট করতে (দেশের বাইরে) পারেন। এখন মোক্ষম সময় তার অবস্থা অনুসারে। এর আগে নেওয়ার মত অবস্থা না থাকায় নেওয়া হয়নি সেটা অত্যন্ত ভালো সিদ্ধান্ত ছিলো। তা আমি বিভিন্ন রিপোর্ট দেখে বুঝেছি।
এদিকে ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে কলকাতা হয়ে দুপুর একটার দিকে ঢাকায় পৌঁছান ডা. দেবী শেঠী। দুপুর দেড়টার দিকে কালো রঙের একটি প্রাইভেটকারে করে বিএসএমএইউ-তে প্রবেশ করেন দেবী শেঠী।
এসময় ডা. দেবী শেঠীকে বিএসএমএমইউ-তে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুণ।
এর আগে সকালে ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে এসে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আশা করছি এমন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার পর তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশাল্লাহ। সর্বোপরি আমরা আশাবাদী।
এর আগে রোববার (৩ মার্চ) রাতে সংবাদ সম্মেলনে ডা. কনক কান্তি বলেছিলেন, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তিনি হাত-পা নাড়ছেন, প্রস্রাব হচ্ছে, যেটা দুপুরের দিকে একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার চিন্তা করা হলেও পরে সেখান থেকেই ঢাকায় আসা মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আপাতত সিঙ্গাপুর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
রোববার ভোরে ফজরের নামাজের পর হঠাৎ শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। প্রথমে আইসিইউতে নেওয়া হলেও পরে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ২ নম্বর বেডে রাখা হয় তাকে। এনজিওগ্রামে কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৯
এমএএম/এজেডএস/ইএআর/এসএইচ