ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ওভারব্রিজে না উঠে রাস্তা পার হলেই ১ ঘণ্টার কাউন্সিলিং

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৯
ওভারব্রিজে না উঠে রাস্তা পার হলেই ১ ঘণ্টার কাউন্সিলিং ট্রাফিক আইন সম্পর্কে কাউন্সিলিং ক্লাস। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নির্ধারিত ফুট ওভারব্রিজে না উঠে সড়ক দিয়ে রাস্তা পার হলেই বসতে হবে এক ঘণ্টার কাউন্সিলিং ক্লাসে। ট্রাফিক আইন ও সচেতনতাভিত্তিক জ্ঞান নিয়ে তবেই ছুটি পাওয়া যাবে ক্লাস থেকে। রাজধানীর বনানীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তর বিভাগ এমনই এক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকেলে এয়ারপোর্ট সড়কে বনানী পুলিশ বক্সে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে কাউন্সিলিং ক্লাস নেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির।  

কিছুক্ষণ আগেই ফুট ওভারব্রিজের বদলে সড়ক দিয়ে যত্রতত্র এবং বিপজ্জনকভাবে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তারা।

এসময় তাদের হাতে ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সচেতনতা বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট পড়তে দেওয়া হয়। পাশাপাশি মৌখিকভাবে তাদের প্রতি বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন ট্রাফিকের সদস্যরা।  
 
ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রাজধানীতে এমনিতেই গাড়ি ও মানুষের খুব চাপ। তার মধ্যে বনানীর মতো জায়গায় গাড়ির চাপ থাকে অনেক বেশি। পথচারীদের নিরাপদ পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহারে অনীহা বেশিরভাগ পথচারীর।
 
ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক নিরাপদ করতে হলে সবাইকে সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা একটু কষ্ট এড়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পার হন। কাছেই ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও সেগুলো তারা ব্যবহার করেন না। তাই আমাদের বিভাগ থেকে এই উদ্যোগ।
ট্রাফিক আইন সম্পর্কে কাউন্সিলিং ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজ
সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সবাইকে সচেতনতা ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার প্রতি তাগিদ দেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যত্রতত্র ও ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের জন্য অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পথচারীদের জরিমানা করার মতো ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই আমরা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছি।  

‘আমাদের মনে হয়েছে, সমস্যার মূলে হচ্ছে সচেতনতা। তাই আমরা পথচারী ও নগরবাসীকে সচেতন করতে তাদের ৪৫ মিনিটের কিছু বেশি সময় কাউন্সিলিং করাই। আমার মনে হয়, মাত্র দুই মিনিট সময় সাশ্রয় করতে গিয়ে যারা একবার এমন ঘণ্টাব্যাপী কাউন্সিলিং ক্লাসে এসেছেন তারা আর দ্বিতীয়বার এই কাজ করবেন না। ’
 
এদিকে পুলিশের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন খোদ কাউন্সিলিং ক্লাস সম্পন্ন করা অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমি এতদিন সড়ক দিয়ে পার হতাম। সকালের দিকে অফিসে ঢোকার একটা তাড়া থাকে। আবার অফিস ছুটির পরে বাসের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর। তাই ওভারব্রিজ ব্যবহার করতাম না। তবে এখন থেকে করবো। পুলিশের সদস্যরা আমাদের যথেষ্ট আন্তরিকতা নিয়ে ট্রাফিকের অনেকগুলো বিষয় বুঝিয়েছেন। আমরা যে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করি না, এটা আসলে ঠিক না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।