ঢাকা, সোমবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পঞ্চগড় সীমান্তে এবার বসেনি ২ বাংলার মিলনমেলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
পঞ্চগড় সীমান্তে এবার বসেনি ২ বাংলার মিলনমেলা ওপার বাংলার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখার করার জন্য এপার বাংলার মানুষের অপেক্ষা। ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে বাংলা নববর্ষের মূল আকর্ষণ হলো কাঁটাতারের দু’পাশে বসা দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। তবে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের কারণে এবার (১৪২৬ বঙ্গাব্দে) বসেনি সেই মিলনমেলা। 

সরেজমিন পঞ্চগড়ের চারটি সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লোকসভা নির্বাচনের প্রভাবে এবার দুই বাংলার মিলনমেলা বসেনি।  

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবারের মিলনমেলার আগ্রহ দেখাননি।

সাধারণত পহেলা বৈশাখে ও ২ বৈশাখে এই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।  

প্রতি বছর বাংলা নববর্ষ পঞ্চগড়ের অমরখানা, শুকানি, মাগুরমারি ও ভূতিপুকুর সীমান্তে কাঁটাতারে বাইরে দুই বাংলার এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দুদেশের হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা ও ভাব বিনিময় করেন। অনেকেই আত্বীয় স্বজনদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কারণ বছরের মাত্র একটি দিনই আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়। কাঁটাতারের দুই পাড়ে থেকে কথা বলেন।  
উপহার বিনিময় করেন। চোখের জলে বিদায় দেন। কয়েক ঘণ্টার জন্য সেখানে যেন মানুষের মেলা বসে যায়।  

অনেকে পদ্মার ইলিশ কিনতে আসেন। কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে টাকা ছুঁড়ে দিলে ইলিশ মেলে। সে এক অন্যরকম আনন্দ।  

ভারতের লোকসভা ভোটের সময় চলে আসায় এবার অনুমোদন মেলেনি এই মিলনমেলার। তবুও সীমান্তে হাজারও মানুষ এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে ফিরে গেছে নিজ বাড়িতে।

পঞ্চগড়ের বোদা থেকে আসা জমিরণ (৭৫) বাংলানিউজকে জানান, যুদ্ধের সময় আমার ভাই বোনরা ভারতে পালিয়ে যায়। গরিব হওয়ায় পাসপোর্ট ও ভিসা করা সম্ভব হয়নি। তাই প্রতিবছর আমি পরিবার নিয়ে এই কাঁটাতারের পাশে এসে ভাই বোনদের সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু এবার এ মেলা না হওয়ায় দেখা হলো তাদের সঙ্গে।

জেলার দেবীগঞ্জ থেকে আসা মনসুরা বেগম (৬৫) বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে অপেক্ষা করছি। কিন্তু কারো সঙ্গে দেখা হলো না।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এরশাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে বিএসএফ এবার মেলায় আগ্রহ দেখাননি। তাই এবার হলো না মিলনমেলা। তবু দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষেরা অনেকেই আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।  

তিনি আরো জানান, মিলনমেলায় আসা অধিকাংশ মানুষের পাসপোর্ট ভিসা করা সম্ভব হয় না। তাই এই মিলনমেলায় এসে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কয়েক মূহুর্ত সময় কাটান তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ