এরা হলেন- শহরের নিশিন্দারা মন্ডলপাড়ার আবু তাহেরের ছেলে রাসেল (২৮) ও নিশিন্দারা মধ্যপাড়ার মৃত কালুর ছেলে পায়েল সেখ (৩৮)। এরমধ্যে রাসেল মামলার সন্দিগ্ধ আসামি।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের প্রেস কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা।
শাহীন হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে এসপি আলী আশরাফ জানান, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নেতৃত্ব নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চলা দ্বন্দ্বের জেরেই এ হত্যকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
তিনি জানান, ঘটনার দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর মোটর মালিক গ্রুপের এক নেতার অফিসে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ওই নেতার সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক সহযোগী, চারমাথার এক ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অফিসের বাইরেও কয়েকজন অপেক্ষায় ছিলেন। সেখানেই বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীনকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়।
পরিকল্পনা অনুসারে ওই নেতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আরও একজন তাদের নিজস্ব লোকজনদের খবর দেয় এবং চারটি মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল উপশহর বাজারের দিকে চলে এসে উপযুক্ত সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন।
আগে থেকে ঘটনাস্থল উপশহর বাজারে অবস্থান করা এক ব্যক্তি ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীকে মোবাইলে খবর জানালে গ্রেফতার পায়েল শেখ, রাসেলসহ ৮ থেকে ৯ জন তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
এসময় নিশিন্দারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিম এবং মোটর মালিক সমিতির হিসাবরক্ষক বাপ্পির সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় শাহীন মোবাইলে কল আসে। তখন তিনি কথা বলতে বলতে একটু আড়ালে গেলে সুযোগ বুঝে আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে গুরুতর আহতাবস্থায় শাহীনকে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে করে প্রথমে নামজগড়ের স্বদেশ হাসপাতালে নিয়ে যান আলিম চেয়ারম্যান ও বাপ্পি। কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি করতে অনীহা প্রকাশ করলে আরেকটি সিএনজিযোগে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসপি আলী আশরাফ আরও জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেওয়া হয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বৃহস্পতিবার ভোরে রাসেলকে নিজ বাড়ি নিশিন্দারার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে তার দেওয়া তথ্যমতে গাবতলীর কাগইল ইউনিয়নের আমলিচুকাই গ্রামের মেয়ের বাড়ি থেকে পায়েল শেখকে আটক করা হয়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। গ্রেফতার পায়েল শেখের নামে বগুড়া সদর থানায় ৯টি মামলা রয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এর আগে রোববার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাত ১১ টার দিকে শহরের নিশিন্দারা উপশহর বাজার এলাকায় বিএনপি নেতা মাহবুব আলম শাহীনকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ ১০জনকে আসামি করে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা (৪৭ নম্বর) মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এমবিএইচ/ওএইচ/