শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির আয়োজনে বেলুন ও শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে খুলনা দিবসের উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন ও পরিচালনা করেন মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান।
পরে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালিটি মহানগরীর মজিদ সরণিতে সংগঠনের কার্যালয় থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার উন্নয়ন ভবনের সামনে এসে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত খুলনা বিভাগীয় কমিশনার নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, সিপিবি মহানগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনিসুর রহমান বিশ্বাস, শিক্ষাবিদ প্রফেসর জাফর ইমাম, অধ্যক্ষ মাজহারুল হান্নান, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম হাবিব, শিল্পপতি আব্দুল জব্বার মোল্লা, শরীফ ফজলুর রহমান, লোকমান হাকিম, অ্যাডভোকেট এস এম মঞ্জুর-উল-আলম, নাগরিক নেতা অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা প্রমুখ।
দুপুরে কেডিএ কমিউনিটি সেন্টারে খুলনার ঐতিহ্যবাহী মেজবান ও নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং খুলনা উন্নয়নের দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। তারপরও এ অঞ্চলের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি থাকায় কিছুটা উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের পর খুলনায় ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
তারা বলেন, দুঃখের বিষয়, সম্প্রতি খুলনায় গ্যাস সরবরাহের জন্য যে পাইপলাইন বসানো হয়েছিলো, সে প্রকল্পটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ও সেগুলো বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সময় গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পটি আবার চালু করার জোর দাবি জানানো হয়। এছাড়া খুলনায় দ্রুত বিমানবন্দর নির্মাণ, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ১০০০ বেডে উন্নীতকরণসহ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা, শহর রক্ষা বাঁধসহ রূপসা ও ভৈরব নদীর তীরে রিভারভিউ রোড ও পার্ক নির্মাণ, মেরিন একাডেমি, ক্যাডেট কলেজ, বয়রায় সড়ক সম্প্রসারণ, খুলনা টেক্সটাইল পল্লী দ্রুত বাস্তবায়ন, মোংলা সমুদ্রবন্দর ও ভোমরা স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন, ভৈরব নদীতে আধুনিক ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ ও ভৈরব নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, আধুনিক পাবলিক হল নির্মাণ, খুলনার শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের প্রসারসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়।
১৮৪২ সালে খানজাহান আলী (রা.) স্মৃতিবিজড়িত ভৈরব-রূপসা বিধৌত নয়াবাদ থানা ও কিসমত খুলনাকে কেন্দ্র করে নতুন জেলার সদর দফতর স্থাপিত হয়। খুলনা মহাকুমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ব্রিটিশদের প্রশাসনিক এলাকা বৃদ্ধি এবং ভৌগলিক অবস্থানের কারণে খুলনার গুরুত্ব বেশি হওয়ায় মাত্র ৪০ বছরের ব্যবধানে ৪ হাজার ৬শ’ ৩০ বর্গমাইল এলাকা, ৪৩ হাজার ৫শ’ জনসংখ্যা অধ্যুষিত খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাকে নিয়ে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি. ডাব্লিউ এম ক্লে দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে খুলনা জেলার কার্যক্রম শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
এমআরএম/একে/এএটি