যা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এরই মধ্যে বিসিসির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি সম্ভাব্য একটি জায়গা নির্ধারণ করে তা পরিদর্শনও করেছেন।
এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেই জমি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য তাদের কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছেন। আর কুকুর পুনর্বাসনের কেন্দ্রের কাজ আগামী তিন মাসের মধ্যে শুরু হতে পারে বলেও জানা গেছে।
বিসিসি সূত্রে জানা যায়, নগরের রাস্তায় দিনে দিনে কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে। এরমধ্যে অনেক কুকুর প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আবার তারা সাধারণ মানুষকে কামড়াচ্ছে এবং নানা ভাবে বিরক্তও করছে। আগে বিসিসির পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে অসুস্থ কুকুর নিধনও করা হতো। তবে প্রাণিপ্রেমী, পরিবেশবিদদের ব্যাখ্যাসহ নানা বাধার মুখে সে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাই সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অভয়ারণ্যের মতো নির্দিষ্ট এলাকায় রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরের জন্য একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করা হবে। এর সম্ভাব্য স্থান হিসেবে নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে নদীর তীরে তিন একর জায়গা নির্বাচন করে বিসিসির মেয়রসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।
বিসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, নাগরিকের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য শহরটির অন্তত তিন হাজার রাস্তার কুকুরকে নিরাপত্তা ও আশ্রয় দিতে চায় তারা। আর তাই কুকুরের জন্য প্রকল্পটি দ্রুত শুরু করা হবেও বলে জানান তারা।
বিসিসির ভেটেরিনারী সার্জন ডা. রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচিত আশ্রয়স্থলে রাস্তার কুকুরদের নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, চিকিত্সা, টিকা এবং অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে। আশ্রয়স্থলে কোনো কুকুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে এবং স্থানীয় পশু চিকিৎসকের সহায়তায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ূন কবির বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে রাস্তার কুকুরের জন্য আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা। তারপর নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে রাস্তার কুকুর সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। যেগুলো আশ্রয়স্থলে নিয়ে যাওয়া হবে। আর আশ্রয়কেন্দ্রে পাগল কুকুর জন্য একটি বিচ্ছিন্ন এলাকা থাকবে বলে জানান প্রকৌশলী হুমায়ূন।
বিসিসির উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। নগরের বাসিন্দাদের মতে, রাস্তায় এখন অনেক কুকুর দেখা যায়। যেসব কুকুর রাতের বেলা মানুষকে কামড়ে দিচ্ছে। আবার রোগাক্রান্ত কুকুরের কারণে নগরবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কাও রয়েছে।
এ বিষয়ে বিসিসির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তার কুকুর অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, মানুষকে কামড়াচ্ছে এতে জলাতঙ্ক রোগ হচ্ছে। কিন্তু কুকুর আমরা মারতে পারবো না। তাই আমরা বরিশালে কুকুরের জন্য নির্ধারিত একটি আবাসস্থল করছি। সেখানে বেওয়ারিশ কুকুর গুলোকে নিয়ে রাখা হবে এবং খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসাসহ যাবতীয় যা করা প্রয়োজন তা করা হবে।
তিনি বলেন, এ ব্যবস্থা এশিয়ার মধ্যে কোথাও আছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কীর্তনখোলা নদীর ওপারে একটি সুন্দর জায়গা (৩ একর) রয়েছে সেখানে রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/