রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর মিলনায়তনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তারা এ দাবি উত্থাপন করেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল জেলা পরিষদ।
বাংলাদেশ জেলা পরিষদ ফোরামের পক্ষ থেকে এলজিআরডি মন্ত্রীকে দেওয়া এক পত্রে দেশের জেলাপরিষদের বর্তমান সমস্যা ও সমাধানের উপায় কী হতে পারে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ওই আবেদনপত্রে উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১) প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর পদমর্যাদা দিয়ে কর্মপরিধি নির্ধারণ করা ২) জেলাপরিষদের বিদ্যমান সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জেলাপরিষদ ফোরামের মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া ৩) জেলা পরিষদ আইন-২০০০ অনুযায়ী জেলার সব উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনার দায়িত্ব জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ওপর ন্যাস্ত করা বা জেলা পরিষদের সভাপতি করা ৪) জেলাপরিষদকে উপজেলা ও পৌরসভার উন্নয়ন কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্বপালনের ক্ষমতা দেওয়া ৫) জেলা পর্যায়ের সব দফতরকে জেলা পরিষদের আওতায় এনে সুসমন্বয়ের মাধ্যমে দফতরগুলোর কার্যক্রমের গতিশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ ৬) এডিপির সাধারণ বরাদ্দের কত শতাংশ সংসদ সদস্যরা পাবেন, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ৭) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের জন্য বাসভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ ৮) জেলার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অধিকতর বিকাশের লক্ষ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের ওপর ন্যাস্ত করার উদ্যোগ ৯) জেলা পরিষদের স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর বিদ্যমান ১ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ এবং একই সঙ্গে জেলা পরিষদের অনুকূলে এডিপির বরাদ্দ বাড়ানো ১০) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অভিপ্রায় অনুযায়ী একান্ত সচিব বা সহকারী সচিবের পদ সৃষ্টি, চেয়ারম্যানের নিরাপত্তার জন্য গানম্যানের পদ সৃষ্টি এবং জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ সৃষ্টি করা ১১) এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ন বা দেশি-বিদেশি প্রকল্প জেলা পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা।
যেমন- প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বহুতল ডাকবাংলো নির্মাণ, প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা এবং জেলা পরিষদের মাধ্যমে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি করে শিশুপার্ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা।
এসব বিষয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে জেলা পরিষদ খুবই প্রয়োজন। কারণ আপনাদের রাজনৈতিক অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের পরামর্শ দিবেন আর মনযোগ দিয়ে কাজ করবেন, তাহলেই সোনার বাংলা নির্মাণ করা সম্ভব। আর আপনাদের যেসব সমস্যা রয়েছে, সেসব আলোচনার ভিত্তিতে সমাধানের প্রচেষ্টা চালাবো আমরা।
তিনি আরও বলেন, নাগরকিদের সেবা দিতে জেলা পরিষদ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ আপনারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। সে জায়গা থেকে আপনাদের কাছে নাগরিকদের অনেক চাওয়া আছে। তাদের চাহিদা পূরণ করতে আপনারা মনযোগ দিয়ে কাজ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
এমএইচ/এএ